জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন থেকে নদী দখলদারের নাম মুছে দেওয়া এবং নদীর সংখ্যা কমানোর প্রতিবাদ জানিয়ে সব নদী দখলমুক্ত করে দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক সংগঠন ‘নোঙর বাংলাদেশ ট্রাস্ট’। গত শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নাগরিক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। বক্তারা বলেন, নদীমাতৃক দেশের নদ-নদীর প্রকৃত সংখ্যা অনুসন্ধান না করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন গত ২৪ সেপ্টেম্বর ১০০৮টি নদী নির্ধারণ পূর্বক তাড়াহুড়া করে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করে নদ-নদীর অসম্পূর্ণ সংজ্ঞা উপস্থাপন করেছে। অথচ নদীমাতৃক এদেশে আরো ৬০০-এর বেশি নদ-নদীর অস্তিত্ব এখনো রয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি ৩৭ হাজার ৩৯৬ নদী দখলদারের তথ্য মুছে আরো একটি বিতর্ক সৃষ্টি করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। তারা বলেন, নদ-নদীর খোঁজে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরেজমিন তথ্য সংগ্রহের কাজ করছি গত ৩০ বছর ধরে। এই কাজে এখন পর্যন্ত যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছি তাতে বাংলাদেশে নদ-নদীর সংখ্যা ওপরে আলোচিত সব সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে। প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক প্রদত্ত নদ-নদীর সংখ্যাটি প্রকৃত সংখ্যার কাছাকাছি বলা না গেলেও তিনি উল্লিখিত গ্রন্থে যে তথ্য দিয়েছেন তার গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশের সুন্দরবনের নদ-নদীর সংখ্যা ২২৭টি উল্লেখ করে তারা বলেন, এর মধ্যে ১৭৯টি নদী এই তালিকায় যুক্ত হয়নি। তাছাড়া বাংলাদেশের বৃহত্তর ময়মনসিংহ, ঢাকা, সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ফরিদপুর, খুলনা, যশোহর, কুষ্টিয়া জেলায় সরেজমিন জরিপ করে ম. ইনামুল হক প্রদত্ত ১২১৬টি নদ-নদীর বাইরে আরো অন্তত ৭০০টি অতিরিক্ত নদ-নদীর সন্ধান মিলেছে। বাংলাদেশের পার্বত্য জেলাগুলো জরিপ করলে সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। প্রকৃতপক্ষে নদ-নদীর সংখ্যা দুই সহস্রের কাছাকাছি কিংবা এই সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান তারা। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষা আন্দোলন সংগঠক অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন, নদী গবেষক ড. তুহিন ওয়াওদুদ, ইনিশিয়েটিভ ফর পিস (আইএফপি) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান ইবলি সাইন রানা। সেমিনারে নোঙর বাংলাদেশ ট্রাস্ট চেয়ারম্যান সুমন শামসের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী।