টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পানি ব্যবস্থাপনায় মহাপরিকল্পনা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। গতকাল রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ঢাকা ওয়াসা আয়োজিত ‘ইনসেপশন ওয়ার্কশপ আপডেটিং দ্য ওয়াটার সাপ্লাই মাস্টারপ্ল্যান ফর ঢাকা সিটি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশে পানি সহজলভ্য হলেও পানির সঠিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করা না গেলে ভবিষ্যতে পানি সংকট গভীরতর হবে।
আমাদের বিভিন্ন নদীর নাব্য কমছে, কারণ উজানের দেশ তাদের নিজেদের প্রয়োজনে পানির প্রাকৃতিক প্রবাহকে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ঘুরিয়ে দিচ্ছে। ফলে ভাটির দেশ হিসাবে আমাদের এখানে পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের লোকসংখ্যা বেড়েছে, নগরায়ন হচ্ছে, ফলে পানির চাহিদাও ক্রমাগত বাড়ছে। এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকা ওয়াসার মাধ্যমে ঢাকা শহরের পানি সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার জন্য মহাপরিকল্পনার উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ। পানির মতো অত্যাবশ্যক সেবায় ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়ে আমার দ্বিমত নেই। কিন্তু কাকে ভর্তুকি দিচ্ছি, কিংবা সে ভর্তুকি পাওয়ার যোগ্য কি না, বিষয়টি বিবেচনায় আমাদের নিতে হবে। ঢাকা শহরে আর্থিকভাবে সচ্ছল মানুষের এলাকার পানির বিল আর মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের বসতির এলাকায় পানির বিল একই হওয়া উচিত নয়। রাষ্ট্রের তাকেই ভর্তুকি দেওয়া উচিত যার সেই আর্থিক সক্ষমতা নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ কিংবা ২১০০ সালের ডেল্টা পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেকোনো লক্ষ্য অর্জনের আগে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তার জন্য কাজ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা ওয়াসা ঢাকা শহরের জন্য পানি ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহের মহাপরিকল্পনা করছে, যা অত্যন্ত আনন্দের।
এ পরিকল্পনা থেকে এমন অনেক বিষয় ও সমস্যা বের হয়ে আসবে, যাতে ভবিষ্যতে ঢাকা শহরের পানির চাহিদার যোগান দেওয়া সম্ভব হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ভবিষ্যতে তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে, বিশেষজ্ঞদের এমন ধারণা যদি সত্যি হয়, তাহলে ঢাকা শহরে পানির চাহিদা আরো বাড়বে উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আমাদের পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুজিত কুমার বালা।