জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানটিতে ভারতীয় সংগীত শিল্পী এ আর রহমান সুর বিকৃতি করেছেন বলে অভিযোগ এনেছেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে নজরুল চর্চা কেন্দ্র-বাঁশরী আয়োজিত আলোচনা ও প্রতিবাদ সভায় এ প্রতিবাদ জানানো হয়। সভায় বাঁশরীর সভাপতি ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অমর সৃষ্টি এই গানটি ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং জেল থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তিসহ সমস্ত রাজনৈতিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই গানটি শুনলে আমরা যে শক্তি পাই, তা আমার মনে হয় না অন্য কোনো ভাষার গানে এইরকম শক্তি পাওয়া যায়। এই গানটি শুনলে আমাদের শরীরের রক্ত টগবগিয়ে ওঠে। সম্প্রতি ভারতের ‘পিপ্পা’ চলচ্চিত্রে গানটির সুর বিকৃত করে ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করা হয়, যা শুধু কবির প্রতি অসম্মানই নয়, বাংলার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও বাঙালি জাতির প্রতি অবজ্ঞা।
তিনি আরো বলেন, আমরা বাঁশরী কবির গানে যে কোনো ব্যক্তির নতুন করে সুরারোপ কিংবা সুর পরিবর্তন চরম ধৃষ্টতা বলে মনে করি। কবির সব সৃষ্টি বাঙালি জাতি তথা বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। এই কালজয়ী গানের বিকৃতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। ভারতের চলচ্চিত্রে এই গানের বিকৃত সুরকে আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। ড. লীনা তাপসী খান বলেন, কাজী নজরুল ইসলামের এত সুন্দর একটি কালজয়ী গান, সেই গানটি শুধু গান ছিল না। একটি স্বদেশিক একটি সত্ত্বা তৈরি করেছিল। এই গানটি একটি জাতীয় সম্পদ। এই গানটি নিয়ে এ আর রহমানের নাড়াচাড়া করা উচিত হয়নি। ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানের ব্যাপারে কী চুক্তি হয়েছিল আমরা এখনো জানি না। আমরা এখনো ধোঁয়াশার মধ্যে আছি। এটা আমাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করতে হবে। একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল বলেন, আমাদের বাঙালি হিসেবে আমরা যদি দুজন বাংলা সাহিত্যিকের নাম বলি তাহলে নজরুলের নাম বলতেই হবে। আমরা সেই নজরুলের গান ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ ষাটের দশকে কত হাজারবার গেয়েছি এর কোনো হিসাব নেই। আজ তার এই কালজয়ী গানের সুর বিকৃত করে ভারতের চলচ্চিত্রে প্রচার হচ্ছে, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।