দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার প্রতিবাদে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরু হয়েছে গতকাল রোববার ভোর ৬টা থেকে। তবে হরতাল উপেক্ষা করেই রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে কাউন্টার খুলে রেখেছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
যদিও যাত্রী সংকটে সকাল থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো দূরপাল্লার গণপরিবহন। সকাল থেকে রাজধানীর বাসটার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে তেমন যাত্রী সমাগম নেই। ফলে পরিবহন শ্রমিকরা অলস সময় পার করছেন। হাতেগোনা যে কয়েকজন দূরপাল্লার যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য আসছেন, তারাও দূরপাল্লার গণপরিবহন না পেয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। শ্রমিকরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আরো আর্থিক সংকটে পড়তে হবে পরিবহন শ্রমিকদের।
রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে সকালে গিয়ে দেখা গেছে, যাত্রীদের জন্য শ্রমিকদের নেই কোনো ধরনের হাঁকডাক। দুপুর সাড়ে ১১টার দিকেও কাউন্টার খুলে অলস সময় পার করছেন সংশ্লিষ্টরা। যাত্রীর জন্য অপেক্ষায় থাকলেও নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী না হওয়া পর্যন্ত কোনো বাস ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তারা। বলছেন, কম যাত্রী নিয়ে বাস ছাড়লে লোকসান গুণতে হয়। বরিশালগামী ইসলাম পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার রনি বলেন, সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে যাচ্ছে কোনো যাত্রী নেই। এ কারণে কোনো বাস ছাড়া সম্ভব হয়নি। তবে গত শনিবার রাতে যেসব গাড়ি আমরা বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়েছি, সেগুলো মোটামুটি ভরা ছিল। এখন দেখা যাক, যাত্রী সংখ্যার উপর নির্ধারণ হবে কখন বাস ছাড়া সম্ভব হবে।
‘এভাবে হরতাল-অবরোধ চলতে থাকলে আমাদের গাড়ি না চললে আমাদের পেটে খাবার যাবে না’, হতাশা প্রকাশ করে বলছিলেন কমফোর্ট লাইন প্রাইভেট লিমিটেডের কাউন্টার ম্যানেজার মো. সুমন। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একজন যাত্রী এসে জিজ্ঞেস করেছে বাস ছাড়ব কিনা। যাত্রী তো নেই।’ গাবতলী বাস টার্মিনালে এসে নির্দিষ্ট গন্তব্যের বাস না পেয়ে বাসার দিকে যাওয়ার সময় কথা হয়, একে আজাদ নামের একজন চিকিৎসকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বগুড়া যাওয়ার জন্য গাবতলী বাস টার্মিনালে আসলেও কোনো দূরপাল্লার বাস ছাড়ছে না। আমি আমার সন্তানকে নিয়ে যাচ্ছিলাম। রাতে গাড়ি ছাড়বে কিনা তাও স্পষ্ট করে বলতে পারছে না। এখন বাসায় চলে যাচ্ছি। পরে সিদ্ধান্ত নেব, কী করব।’