হৃদরোগের ঝুঁকিতে ৯৫ শতাংশেরও বেশি ট্রান্সজেন্ডার নারী

প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ‘ট্রান্সজেন্ডার মতবাদের ভয়াবহতা’ শীর্ষক দুই ঘণ্টাব্যাপী একটি উন্মুক্ত পাঠচক্রের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১০টায় চবির বুদ্ধিজীবী চত্বরে পাঠচক্রটি আয়োজিত হয়। এ সময় ট্রান্সজেন্ডার মতবাদের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব চলে। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়ব আহমেদ সিয়ামের সঞ্চালনায় পাঠচক্রে আলোচক ছিলেন দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, বিয়ে নারীকে নিরাপত্তা দেয়। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের ফলে নারীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। কোনো মেয়ে গর্ভবতী হলে এর কষ্ট পুরুষ পায় না। অন্যদিকে বৈবাহিক চুক্তির ফলে পুরুষকে নারীর প্রতি কর্তব্য নিশ্চিত করতে হয়। ‘লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল ও ট্রান্সজেন্ডার’ বা ‘এলজিবিটি’ মতবাদ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককে স্বাভাবিক করে। যা আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সেক্স (লিঙ্গ) ও জেন্ডার দুইটি আলাদা বিষয়। সেক্স একটা বায়োলজিক্যাল ফর্ম। অপরদিকে জেন্ডার একটা সোশ্যাল কনস্ট্রাকশান। তিনি বলেন, ট্রান্সজেন্ডার মূলত একটি মানসিকবিষয়, যা ‘জেন্ডার ডায়াসফোরিয়া’ নামে পরিচিত। আমেরিকার জেন জেডদের (যাদের জন্ম ১৯৯৭-২০০২) ৪০ শতাংশ ট্রান্সজেন্ডার মতবাদে বিশ্বাসী। যা পরিবার ব্যবস্থাকে ভেঙে দেয়। নারীর বিশেষায়িত অধিকারকে বিঘ্নিত করে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জেন্ডার পরিবর্তনের পরে অনেকে আগের পরিচয় নিয়ে আফসোস করে। রিট্রানজিশন করতে না পেরে কষ্টে ভোগে। এসব নিয়ে আমাদের মাঝে খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত। সৈয়ব আহমেদ সিয়াম বলেন, হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডার সম্পূর্ণ আলাদা দুইটি বিষয়। শব্দের ধোঁকায় হিজড়া ব্যানারে দেশে বিকৃত ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুটির বৈধতা আদায়ের চেষ্টা চলছে। হিজড়া একটি শারীরিক বিষয়। আর ট্রান্সজেন্ডার হলো সম্পূর্ণ মনের বিষয়। অদ্ভূত, বিকৃত এই মতবাদকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে আমাদের সমাজে। দেশে ট্রান্সজেন্ডার বা রূপান্তরকামিতার বৈধতা প্রদানের চেষ্টা চলছে। সাথে সেকশন ৩৭৭ ধারাটি বাতিল করে সমকামিতা ও বিকৃত যৌনাচার বৈধ করার প্রচেষ্টা হচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে আমরা এর সাথে পুরোপুরি দ্বিমত পোষণ করছি। আমরা মনে করি, দেশীয় মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক এই মতবাদকে বৈধতা দেওয়া উচিত হবে না।

পাঠচক্রে অংশগ্রহণকারী ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইসতিয়াক হোসেন মজুমদার বলেন, বর্তমানে পাশ্চাত্যে নিজেদের ট্রান্সজেন্ডার দাবি করা অধিকাংশ লোক অস্ত্রোপচার বা হরমোন সার্জারি করে না। মুখে বলা, নাম বদলানো, পোশাকে অল্পস্বল্প পরিবর্তন আনাই তাদের জন্য যথেষ্ট। এই মতবাদের অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। প্রথমত, এটি দেশীয় আইন ও মূল্যবোধের সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক, যেটি সমকামিতাকে সমর্থন করছে।

দ্বিতীয়ত, উত্তরাধিকারের বিষয়ে রূপান্তরকামী নারী-পুরুষদের ভাগ-বাটোয়ারা আইনি জটিলতা এবং সামাজিক সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। তৃতীয়ত, নারীদের প্রণোদিত এবং সমাজের মূলস্রোতে পুরুষদের সঙ্গে এগিয়ে নিতে কোটাসহ বিশেষায়িত যত সুবিধা আছে সব জায়গায় রূপান্তরকামীদের অংশগ্রহণে প্রতিযোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরও বলেন, তাছাড়া, রূপান্তরকামীদের মারাত্মক রকম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। কেন না, নামক বিখ্যাত জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, হরমোন চিকিৎসা নেওয়া ট্রান্সজেন্ডার নারীদের ৯৫ শতাংশের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি। যে গবেষণাটি ৫ বছর মেয়াদি ২৬৭১ ট্রান্সজেন্ডার নারীকে নিয়ে ডেনমার্কে স্টাডিটি পরিচালনা করেছিল।