খুলনায় আজ শুরু হচ্ছে দুবলার চরের রাস উৎসব
প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
সুন্দরবনের দুবলার চরে তিনদিন ব্যাপী রাস উৎসব আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে। রাস পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে ২৫ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনের দুবলারচরে ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্ণিমায় পূজা ও পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে নির্বিঘ্নে উৎসব পালনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পূজা অর্চনার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী মন্দির। গতকাল শুক্রবার সকালে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নূরুল করিম আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, শনিবার থেকে ঐতিহ্যবাহী ‘রাস পূর্ণিমা পূজা’ অনুষ্ঠিত হবে। পুণ্যার্থী ছাড়া অন্যরা এ সময় সুন্দরবনে যেতে পারবেন না। পুণ্যস্নানে নিরাপদে যাতায়াতের জন্য দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ পাঁচটি পথ নির্ধারণ করেছে। পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে নদীপথে নিরাপদ যাতায়াতে ও হরিণ শিকার বন্ধে বনরক্ষীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল ও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
রাস উৎসবের ইতিহাস : দুবলার চরের রাস উৎসব প্রাচীন ইতিহাস নিয়ে নানা মত প্রচলিত আছে। জানা গেছে, ঠাকুর হরিচাঁদের অনুসারী হরি ভজন নামে এক হিন্দু সাধু মেলার শুরু করেছিলেন ১৯২৩ সালে। এই সাধু ২৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে সুন্দরবনে গাছের ফল-মূল খেয়ে জীবন ধারণ করেছেন। আবার কারো কারো মতে, শারদীয় দুর্গোৎসবের পর পূর্ণিমার রাতে বৃন্দাবনবাসী গোপীদের সঙ্গে রাস নৃত্যে মেতেছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অবতার শ্রীকৃষ্ণ। এটিকে স্মরণ করেই দুবলায় আয়োজিত হয়ে আসছে রাস উৎসব। অনেকে এটাও মনে করেন, শ্রীকৃষ্ণ কোনো এক পূর্ণিমা তিথিতে পাপ মোচন ও পুণ্যলাভে গঙ্গাস্নানের স্বপ্নাদেশ পান। তার স্বপ্নাদেশকে সম্মান জানাতে বসে রাসমেলা।
কী হয় রাস উৎসবে : আগে দুবলার রাস উৎসবে দেশের বিভিন্ন জায়গা ছাড়াও বিদেশ থেকে প্রচুর পুণ্যার্থী ও পর্যটকের সমাগম ঘটত। প্রায় অর্ধলাখ মানুষ প্রতি বছর এ উৎসবে যোগ দিতেন। রাস উৎসবে প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রার্থনায় বসেন পুণ্যার্থীরা। তারা সাগরকে সামনে নিয়ে নির্জনে কৃষ্ণপূজার সঙ্গে দেবতা নীলকমল আর গঙ্গাদেবীর আরাধনায় মগ্ন হন।
পাপমোচন করেন সমুদ্রস্নানে। সূর্যোদয়ে পানিতে ভাসিয়ে দেন ফল-ফুল। এরপর ঢাক-ঢোলক-কাসা-মন্দিরা বাজিয়ে ভজন-কীর্তন নিনাদিত করেন চারপাশ। পূজা-অর্চনার ফাঁকে সূর্যাস্তের পর সাগরকে সাক্ষী রেখে আকাশের বুকে উড়িয়ে দেওয়া হয় ফানুস।