হরতাল-অবরোধে পর্যটকশূন্য সুন্দরবন

প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

হরতাল-অবরোধে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন খাতে। ভরা মৌসুমেও সুন্দরবনের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে না কোনো পর্যটক বহনকারী লঞ্চ। পর্যটক না আসায় পূর্বে থেকে বুকিং করা ট্রিপ বাতিল করছে ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো। এর ফলে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেও আর্থিক লোকসানের মুখে পর্যটক সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বন বিভাগ। এতে প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্য সব কিছুর ওপর। ট্যুর অপারেটররা জানান, সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতি বারবার আকর্ষণ থাকে পর্যটকদের। বিশেষ করে প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসকে ধরা হয় পর্যটন মৌসুম। এ সময়ে সুন্দরবনে পর্যটকের সংখ্যা সব থেকে বেশি হয়। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সুন্দরবনে পর্যটক সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। তবে চলতি অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতে। টানা হরতাল আর অবরোধের কারণে সুন্দরবন ভ্রমণে আগ্রহ হারাচ্ছেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন স্পটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, অন্যান্য বছর এ সময় সুন্দরবনের করমজলসহ সবগুলো স্পটে পর্যটকদের ব্যাপক উপস্থিতি থাকে। তবে ওই চিত্র বর্তমানে একেবারে ভিন্ন। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে পর্যটকরা এখন আনন্দ উপভোগ করার জন্য ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। তাই সুন্দরবনের পর্যটন স্পটগুলোতে এখন শুনসান নিরবতা। ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান সুন্দরবন লাইভ ট্যুরের মালিক গোলাম রহমান ভিটু বলেন, খুলনা ও মোংলা মিলে ৭০টিরও বেশি সুন্দরবনগামী বিলাস বহুল লঞ্চ আছে। এগুলোর পেছনে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। চলমান পরিস্থিতির কারণে সব ট্যুর একে একে বাতিল হচ্ছে। এতে আমাদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। এই সময়ে আমরা ট্যুরের জন্য অতিরিক্ত লোকও নিয়োগ করে রেখেছি।

এদের বেতন যেমন দিতে হচ্ছে। তেমনি বিনিয়োগ করা টাকাও ফেরত পাচ্ছি না। সুন্দরবন বন বিভাগ খুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর সুন্দরবনে পর্যটক সংখ্যা বাড়ছিল। আমাদের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বাড়ছিল। এ পরিস্থিতিতে আসলে পর্যটক না আসলে আমাদের কিছুই করার নয়। আশা করি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারো পর্যটক সংখ্যা বাড়বে। সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থ বছরে সুন্দরবন ভ্রমণ করেছিলেন ২ লাখ ১৬ হাজার পর্যটক। যা থেকে রাজস্ব আয় হয় ৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে সুন্দরবনে ৭৫ হাজার ৫৬০ জন দেশি এবং ৮৬৪ জন বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছেন। ওই অর্থবছর সুন্দরবন বিভাগ পর্যটকদের কাছ থেকে ৮৮ লাখ ৯৪ হাজার ৭০ টাকা রাজস্ব আয় করে।