গবেষণার মাধ্যমে সাফলতায় কৃষির চেয়ে স্বাস্থ্য খাত অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, কৃষিতে গবেষণায় বড় সাফল্য এসেছে। তবে স্বাস্থ্য খাতে গবেষণার মাধ্যমে অনুরূপ সাফল্য এখন পর্যন্ত দেখানো যায়নি। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে বাংলাদেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের ঘুমের মধ্যে রোগের প্রাদুর্ভাব, ঝুঁকি এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতি নিয়ে প্রাথমিক গবেষণার ফলাফল ও প্রশিক্ষণের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। উপাচার্য বলেন, গবেষণার মাধ্যমে ইরি-বিরিসহ ফসল পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে কৃষির মতো চিকিৎসা বিজ্ঞানসহ স্বাস্থ্য খাতেও রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে অনুরূপ সাফল্য নিশ্চিত করতে হবে।
শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা অনেক দূর এগিয়েছে। করোনা পরীক্ষার কিট উদ্ভাবন করে ২৫০ টাকায় মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। করোনার দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব নিয়ে গবেষণা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সংক্রান্ত এন্টিবডির দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অন্ধত্ব প্রতিরোধে গ্লুকোমা স্ক্রিনিং এবং এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, কোল্ড ড্রিংকস ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাশা অনুযায়ী গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। আশা করি, আগামীতে প্রধানমন্ত্রীর শত কোটি টাকার সমন্বিত গবেষণা প্রকল্প থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসকরা ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাবেন। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা খাতে গবেষণার জন্য অব্যাহতভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। আজকের ঘুম সংক্রান্ত রোগ ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি নিয়ে যে গবেষণা কার্যক্রমটি হাতে নেওয়া হয়েছে সেটাও প্রধানমন্ত্রীর শত কোটি টাকার সমন্বিত গবেষণা প্রকল্পেরই অংশ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ২০৪১ সালের মধ্যে গবেষণার ক্ষেত্রেও স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের স্বপ্ন পূরণ হবে। সেমিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে অনিদ্রা, নিদ্রাকালীন শ্বাস রোগ; যেমন নাক ডাকা, অতিনিদ্রা, ঘুম সজাগ চক্রের ব্যাধি, ঘুম সংক্রান্ত চলাফেরা ও নড়াচড়া ব্যাধি, নিদ্রাকালীন অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ইত্যাদি রোগে ভুগছেন। এসব রোগের কারণে ডায়াবেটিস, স্টোক, হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। অনেকে ঠিক মতো ঘুম না হওয়ায় অফিসে কাজে অমনোযোগী থাকেন, মেজাজ খিটখিটে থাকে, কলিগদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে থাকে। আরো বলা হয়, এই গবেষণাটি সম্পন্ন হলে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। ঘুমের মধ্যে আরো কি কি সমস্যা ও রোগ রয়েছে এবং সে কারণে অন্যান্য রোগের ওপর কি ধরনের প্রভাব ফেলছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। যা ঘুমের সমস্যা সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।