মাছ কেটে সংসার চলে জাহিদুল ইসলামের। ১৫ বছর ধরে নগরীর পোর্টরোড বাজারে মাছ টাকার কাজ করেন তিনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বরিশালের রসুলপুর কলোনিতে বসবাস করেন জাহিদুল ইসলাম।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, জীবনের শুরুর দিকে ধার-দেনা করে চললেও এখন মাছ কেটে ভালোই দিন কাটছে। অভাব-অনটনে অন্যের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কাজ মেলেনি। কিছুদিন মানুষের বাসা-বাড়িতে মালামাল ওঠাণ্ডনামার কাজ করি। সকাল-সন্ধ্যা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে কোনো রকম সংসার চলত।
তিনি বলেন, অভাবের কারণে দুই ছেলেকে লেখাপড়া শেখাতে পারেনি। পরে কয়েকজনের পরামর্শে একটি বটি কিনে নগরীর পোর্টরোড মাছ বাজারে বসে মাছ কাটার কাজ শুরু করি। এরপর থেকে এভাবেই চলছে জীবন সংগ্রাম। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে মাছ কাটা ও পরিষ্কারের কাজ। এতে ৪০০-৮০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম হয়। শুধু জাহিদ নয়, পোর্টরোড বাজারে নারী-পুরুষ মিলিয়ে মাছ কাটার কাজ করেন অন্তত ১০-১৫ জন। সবাই মাছ কেটে ভালোই উপার্জন করছেন বলে জানান।
শামীম নামের আরেকজন জানান, বিভিন্ন পেশায় কাজ করে এখন পোর্টরোড বাজারে সাতবছর ধরে মাছ কাঁটার কাজ করছেন। এতে ভালোই চলছে তার সংসার। ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কাজ করে হাজার টাকা আয় হয়। তিনি আরো বলেন, বাসাবাড়ির জন্য কেনা মাছের চেয়ে হোটেলের মাছকাটা বেশি হয়। ছোট ছোট মাছ হোটেলের লোকজনই বেশি কাটিয়ে নেয়। প্রকার ভেদে ৫-২৫ টাকা পর্যন্ত কেজি রাখা হয়। পোর্টরোড বাজারে আসা সাইদুর রহমান বলেন, বাসায় কেউ এখন আর মাছ কাটতে চায় না। যে কারণে বাধ্য হয়ে বাজার থেকে মাছ পরিষ্কার করে নিয়ে যাই। এতে সংসারে শান্তিও বজায় থাকে আবার সময়ও বাঁচে। সজীব নামের আরেকজন বলেন, এমনিতে সারাদিন নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। বাসায় কাজের লোকের সমস্যা রয়েছে। মেয়েরা রান্নাবান্না আর ঘরের জরুরি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাই সময় বাঁচাতে, বাজার থেকে মাছ কিনে পরিষ্কার করে নিয়ে যাই। এতে করে বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। পোর্টরোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার সমিতির অর্থ সম্পাদক ইয়ার হোসেন শিকদার বলেন, বেশ কিছু বছর ধরেই প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন নারী-পুরুষ এ বাজারে মাছ কাটার কাজ করেন। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ক্রেতারা মাছ কিনে পরিষ্কার করে নিয়ে যান। কাটার ভয়ে আগে ছোট মাছ কিনতে চাইত না। এখন বাজারে মাছ কেটে দেওয়ার লোক থাকার ফলে সবাই মাছ কিনছে।