ঢাকা ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রংপুরে দিনে গরম আর ভোরে হিমেল হাওয়া

রংপুরে দিনে গরম আর ভোরে হিমেল হাওয়া

রংপুরে বইতে শুরু করেছে শীতের হাওয়া। আর শীত মানেই প্রশান্তি। ঘুমের জন্য সবচেয়ে বড় ও ভালো ঋতু। এই ঋতুর শুরুর দিকে দিনের আলোয় গরম আর ভোররাতে শীত বইতে শুরু করেছে হিমেল হাওয়া। রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে উঠছে ঠান্ডা। সেভাবে শীত শুরু না হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনুভূত হচ্ছে শীতের আমেজ। আর এই শীত মোকাবিলায় রংপুরে আগাম প্রস্তুতি চলছে সব মানুষের। ঠান্ডা বাড়ার সাথে সাথে মানুষের হিরিক পড়তে শুরু করেছে লেপ-তোষক বানাতে। রংপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে লেপ-তোষক বানানোর চিত্র চোখে পড়ার মতো। এর মধ্যে রংপুরের লালবাগ, খামার মোড়, স্টেশন, স্টেশনের বিভিন্ন এলাকা ও এলাকার বিভিন্ন ক্যাম্প, জাহাজ কোম্পানি, হনুমানতলাসহ বিভিন্ন স্থানে ও বিভিন্ন গলিতে গিয়ে দেখা যায় লেপ-তোষক বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগর ও বানিয়ে নিতে ব্যস্ত হচ্ছেন ক্রেতারা।

স্টেশন নগরীর লেপ-তোষক বানানোর কারিগর আমজাদ বলেন, আমরা প্রতিদিন লেপ-তোশক সেলাই করে থাকি। লেপ বা তোষক একটি বানাতে সাইজ অনুযায়ী ১৫০-২০০ টাকা মজুরি নেই। এতে করে দৈনিক আমাদের ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম হচ্ছে। এ দিয়েই আমাদের সংসার চলছে। সামনে কাজ আরো বাড়বে বলে আশা করছি। লেপের ক্রেতা মনোয়ারুল বলেন, দিনে গরম হলেও শেষ রাতের দিকে ঠান্ডা লাগে। বর্তমানে খেতা, চাদর দিয়ে এই ঠান্ডা পার হলেও কয়েকদিনের মধ্যে ঠান্ডা বেরে যাওয়ার আশঙ্কা আছে তাই আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছি। কারণ ঠান্ডা যত বাড়বে লেপ-তোষকের বানানোর খরচ ততটাই বাড়বে। লালবাগ বাজারের লেপ-তোষক বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, শীতের লেপ- তোষক বানানোর ব্যবসা এখনো জমেনি, আশা করছি ৪/৫ দিনের মধ্যে ব্যবসা ভালো হবে, এখন প্রতিদিন গড়ে ৪-৫টি লেপ-তোষক বিক্রি হয়। আমার কাছে থাকা বর্তমানে তুলার দাম ভিন্নতার উপর ৮০ টাকা হতে ২৫০ টাকা। কাপড়ের ভিন্নতা অনুযায়ী তোষকের ৩৬ টাকা হতে ৪৫ টাকা গজ ও লেপের ৫০ টাকা হতে ৬০ টাকা গজ। লেপ তৈরি করা (রেডিমেট) সিঙ্গাল ৫৫০-৬০০ টাকা, ডাবল ১৪০০-১৫০০ টাকা। তোষক তৈরি করা (রেডিমেট) সিঙ্গেল ৩০০-৩৫০ টাকা, ডাবল ৮০০-৯০০ টাকা। আবার বানিয়ে নিলে দাম একটু বেশী হবে। স্টেশন নগরীর পাইকারী লেপ-তোষক-মশারীর কাপড় ও তুলা ব্যবসায়ী মিজু বলেন, প্রত্যেকদিন প্রায় ১০-১২টি লেপ-তোষকের অর্ডার আসছে। তুলা ও কাপড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লেপ-তোষক বানাতে খরচ একটু বেশি পড়ছে। বর্তমানে শিমুল তুলা, প্রতি কেজি ৪০০টাকা থেকে ৫০০ টাকা সেটাও ওঠানামা করছে। কার্পাস তুলা ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, গার্মেন্ট তুলা কালো ৫০ থেকে ৭০ টাকা, সাদা তুলা ৯০ থেকে ১০০ টাকা। আর কাপড় কিনতে হচ্ছে গজ অনুযায়ী ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সব মিলিয়ে একটি ভালো মানের লেপ বানাতে খরচ পড়ছে ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকা ও একই সাইজের ভালো মানের তোষক বানাতে খরচ পড়ছে প্রায় ১২০০ থেকে ২০০০ টাকা। আবার আরো একটু ভালো নিলে দাম আরো একটু বেশি হচ্ছে। আবার নরমাল বা রেডিমেট নিলে দাম আরো কমতে পারে।

আর এক ব্যবসায়ী এরশাদ বলেন, রংপুরে ব্লেজার তুলা ৩০-৪০ টাকা, খাকি তুলা ৪০-৫০ টাকা, কার্পেস তুলা ১৫০-২০০ টাকা, শিমুল তুলা ৪০০-৫০০ টাকা, ডিজিটাল তুলা ৬০-৮০ টাকা। কাপড়ের মূল্য লেপের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভেদে ৫০-৮০ টাকা গজ, তোষক ৪০-৫০ টাকা গজ। তৈরি করা (রেডিমেট) সিঙ্গাল তোষক ৩৫০-৪৫০ টাকা, ডাবল ৮০০-৯০০ টাকা। লেপ সিঙ্গাল ৬০০-৭০০ টাকা, ডাবল ৮৫০-১০০০ টাকা। তবে তুলা বাড়লে বা ভালো তুলার ক্ষেত্রে অবশ্যই দাম বেশি হবে। দৈনিক আমাদের এখান হতে ৩-৪টি সিঙ্গাল ও ৪-৫টি ডাবল লেপ-তোষক বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি এ মাসের মাঝামাঝি বিক্রি বেশি হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত