হরতাল-অবরোধে ককটেলের ব্যবহার বেড়েছে : ডিএমপি

প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

হরতাল-অবরোধে ককটেলের ব্যবহার বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন। গতকাল বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ৩০ নভেম্বর ককটেল বিস্ফোরণসহ অন্যান্য ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া ও ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, গত ৩০ নভেম্বর বিভাগীয় কমিশনার ও ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার নির্বাচনি আসনগুলোর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের পাশে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেদিন ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। বিকেল ৩টার একটু পরে রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসের পাশে দুই-তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ঘটনার পর ডিএমপির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সন্দেহাতীতভাবে সঠিক ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে আমরা কাজ করি। এরই ধারাবাহিকতায় আশিকুর রহমান পান্না ও পল্টন থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিএমপির এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তাররা ভয়ংকর তথ্য দিয়েছেন। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ছাড়াও তারা দুজন আরো আটটি ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ছাড়া রমনার বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন হোসেন রনি ও বিল্লাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ১২টি ঘটনা সফলভাবে ঘটিয়েছেন। গ্রেপ্তার এ চারজন সর্বমোট ২১টি ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু মামলা রয়েছে। আরো কোনো ঘটনায় জড়িত কি না এবং তাদের পেছনে কারা রয়েছে, তাদের আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করব। ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ২৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হরতাল-অবরোধে যে নাশকতা কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা হচ্ছে, এর বড় একটি অংশ আমরা এক্সিকিউট (সম্পাদন) করতে দিইনি। তারপরও কিছু ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন ঘটনার সময় আমরা হাতেনাতে ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় যাদের নাম আসছে, তাদের গ্রেপ্তার করেছি। যাতে কোনো নিরীহ কেউ ভুক্তভোগী না হন, সেজন্য নিশ্চিত না হয়ে কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, কম হলেও আমরা কোয়ালিটি অ্যারেস্ট করতে পেরেছি। তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার করতে না পারলেও তদন্তে কারও নাম এলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা যেকোনোভাবে মহানগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, হরতাল-অবরোধের প্রথমদিকে ককটেলের ব্যবহার কম ছিল। কিন্তু গত ২ সপ্তাহ ধরে ককটেলের ব্যবহার বাড়ছিল। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ককটেলের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা হরতাল-অবরোধ আহ্বান করে, তাদের উদ্দেশ্য সর্বসাধারণকে ভীতসন্ত্রস্ত করা। এজন্য তারা এ ধরনের কাজ করছে। তারা গ্রেপ্তারের ভয়ে এসব করার জন্য ভাড়া নেয়, তারা আবার খাবার-টাকার বিনিময়ে কাউকে ভাড়া করে এসব ঘটনা ঘটায়। এ ছাড়া দলে একটা অবস্থান করে দেওয়া হবে, এ ধরনের আশ্বাসে তাদের দিয়ে নাশকতা করানো হচ্ছে। গ্রেপ্তার দুজনের দলীয় পরিচয় পেয়েছি, বাকি দুজনও দলের কর্মী।