রাজনৈতিক দলসহ সব মানুষকে মানবতাবোধ সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এসময় হরতাল-অবরোধের নামে আগুন দেওয়ার মতো কাজ অমানবিক ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে জনলোকের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ১৯৭১ সালে মার্কিন সরকার বাংলাদেশ ও মানবিকতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তবে মার্কিন জনগণ ও গণমাধ্যমের মধ্যে মানবিকতা বোধ ছিল। তারা বাংলাদেশের পক্ষে চাপ প্রয়োগ ও মানবতার কথা বলে গেছে। অর্থাৎ মানবিকতা সবসময় পৃথিবীতে আছে, তবে ক্ষমতায় যারা থাকে তারা অমানবিক হয়ে যায়। এটি সমুন্নত রাখতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের মূল কাজ জনকল্যাণ। জাতির পিতা আমাদের একটা সংবিধান দিয়ে গেছেন, যেখানে ২২টি মানবিক অধিকার সংরক্ষিত আছে। আজ আমরা অবরোধ-হরতাল দেখছি। এটির অধিকার রাজনৈতিক দলের রয়েছে। কিন্তু হরতাল-অবরোধের নামে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের যেসব ঘটনা ঘটেছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। অপরদিকে জনপ্রতিনিধিদের সাম্প্রতিক সম্পদের হিসেবে আমরা দেখছি কারো কারো সম্পদ প্রচুর পরিমাণে বেড়েছে। এ বিষয়ে জনগণের কাছে স্বচ্ছভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত। এটি নিশ্চিতে শেখ হাসিনা তথ্য অধিকার আইন করেছে বলেও জানান সাবেক ঢাবি উপাচার্য। শিক্ষা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের মূল সমস্যা আমরা সঠিক শিক্ষাব্যবস্থা করতে পারিনি। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন প্রয়োজন। শিক্ষা হওয়া উচিত মানবিক ও কল্যাণমুখী। বর্তমান কারিকুলামে শিক্ষা হবে নৈতিক ও কর্মমুখী শিক্ষা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য বলেন, দেশ এগিয়ে গেছে তবে ৩০ লাখ মানুষ যা চেয়েছিল তা পায়নি। ১৯৭২ পরবর্তী সময়ে দেশের মানুষকে খাবার জোগান দেওয়া কঠিন হতো। এখন ১৭ কোটি মানুষের খাবার জোগান দিচ্ছে। এদেশের কৃষক তার কথা রেখেছে। রাজনৈতিক নেতারা তা রক্ষা করতে পারিনি। তবে এখন সার ও কৃষি পণ্যের জন্য তাদের রক্ত দিতে হচ্ছে না। এটার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ। তিনি আরো বলেন, রাজনীতিবিদরা যদি তাদের কথা রাখত, তবে আজ সবার মুখে হাসি থাকত। তবে ৭৫ এর পরে বাংলাদেশ যে উল্টো পথে যাত্রা শুরু করেছিল। এখন তা আবার সঠিক পথে এগোচ্ছে। যদিও দেরি হয়ে গেছে; কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছে।