চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলি এটা যেন ভুলে না যাই
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
সাধারণ মানুষকে উন্নত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত করতে চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের জেলাগুলোতে শতাধিক ও উপজেলাগুলোতে পাঁচ শতাধিকসহ সর্বমোট ৬ শতাধিক হাসপাতাল রয়েছে। সেগুলোতে কোটি কোটি সাধারণ মানুষ সেবা নিতে আসে। চিকিৎসকদেরই তাদের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ আমরা সবাই জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলি, সেই কথাটা যেন ভুলে না যাই। গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) রেসিডেন্ট ও নন রেসিডেন্টদের ভাতা প্রদান এবং ‘স্মার্ট হেলথ কেয়ার ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জাহিদ মালেক বলেন, দেশের চিকিৎসাসেবাসহ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে। দেশের রোগীদের চিকিৎসাসেবায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় মানুষের ভরসার শেষ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। এখানে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট, লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট, ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট, টেস্টটিউব বেবির জন্মদান ও জোড়া শিশুকে আলাদা করাসহ জটিল রোগের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, কোটি টাকার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র ৩ লাখ টাকায় দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজও চিকিৎসাসেবায় সুনাম অর্জন করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যদিও গত ৫ বছর ডেঙ্গু মোকাবিলায়, করোনা মোকাবিলায় কেটে গেছে, তারপরেও সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবা খাতের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় অনেক উন্নত দেশকে পেছনে ফেলে এশিয়ায় প্রথম এবং বিশ্বে বাংলাদেশ পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। ইপিআই কর্মসূচিতে সাফল্যের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্যাকসিন হিরো পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। স্বাস্থ্যসেবায় সাফল্যের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের একমাত্র কালাজ্বর মুক্ত দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। অনুষ্ঠানে কি- নোট স্পিকার ও সভাপতি হিসেবে ‘স্মার্ট হেলথ কেয়ার ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নির্ণয়ক এন্টিবডি নির্ধারণ, বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের মান ও ক্ষতিকর উপাদান চিহ্নিত করাসহ শত শত গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেও দেশেই চিকিৎসাসেবা নিতে পছন্দ করেন। আমাদের লক্ষ্য হলো দেশের রোগীরা যাতে চিকিৎসাসেবার জন্য দেশের বাইরে না যায়। সে লক্ষ্য পূরণে দেশেই সব ধরনের জটিল চিকিৎসা স্বল্প ব্যয়ে নিশ্চিত করার কাজ চলছে। তবে এ লক্ষ্য পূরণে অবশ্যই প্রয়োজনে দক্ষ জনবল সুনিশ্চিত করতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমিরেটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু স্বপ্নের কথা বলেন না, তিনি স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে জানেন। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। স্মার্ট হেলথ কেয়ারসহ স্মার্ট বাংলাদেশও তার নেতৃত্বে বাস্তবায়ন হবে। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিয়া, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. রনজিত কুমার সরকার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, চিকিৎসক, রেসিডেন্ট ও নন রেসিডেন্ট চিকিৎসক, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, নার্স, কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।