দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশে যে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে, তার প্রভাব পড়ছে ঘরে ঘরেও। এই উৎসব থেকে বাদ যাননি নারী ভোটাররাও। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিচ্ছেন নারীরা। রাজধানীর ভিকারুন নিসা নূন স্কুলে ভোট দিতে এসেছেন আসমা আক্তার। তিনি বলেন, এই তিনবার ভোট দিলাম জাতীয় নির্বাচনে। প্রতিবারই ভোট দিতে পেরে ভালো লাগে। নাগরিকত্বের একটা আলাদা অনুভূতি এটা। এটা আমাদের অধিকার। আইডিয়াল স্কুলে ভোট দিতে আসা সায়মা বেগম জানান, ভোটের সকালে ভিড় কম ছিল। সে সময় এসে একবার ঘুরে গেছি। লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে চেয়েছিলাম। তাই দুপুরে আবার এলাম ভোট দিতে। সবাই মিলে লাইনে দাঁড়িয়ে গল্প করছি, কথা বলছি। আবার ভোট নিয়েও তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে। এদিকে হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজে ভোট দেন তরুণী অদিতি সরকার। তিনি বলেন, ভোট দেওয়ার আলাদা একটা আনন্দ আছে। এখানে না এলে এই অনুভূতি বোঝা যায় না। তবে এবার ভোটের উৎসব আগের মতো জমেনি। সব দল এলে হয়তো জমে যেতো। বদরুন নাহার করুনা হাঁটতে হাঁটতে স্বামী অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আব্দুল মালেককে নিয়ে ভোট দিতে আসেন মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রে। মহিলা ভোটকেন্দ্রে প্রথম ভোটার হিসেবে তিনিই ভোট দেন সকালে। ভোট দিয়ে বললেন, এইবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ভোট দিলাম। এর আগে যাকে ভোট দিয়েছি তিনিই বিজয়ী হয়েছেন। এবারও হবে আশা করি।
মুগদাপাড়ার এসসি ন্যাশনাল মডেল হাইস্কুল কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন তৌহিদা ফেরদৌস। তিনি বলেন, পাঁচ বছর পর ভোট দিতে পারলাম, সেজন্য আমি খুশি। নিজের ভোট নিজেই দিতে পেরে আরও ভালো লাগছে। বিএনপি নির্বাচনে আসলে ভোট জমতো। আরও বেশি আনন্দ লাগত। ৮০ ঊর্ধ্ব বছর বয়সি রিজিয়া বেগম ছেলে সামসুল আলম বয়াতী (৫৩) ও ছেলের বউ মিনারা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে সপরিবারে ভোট দিতে এসেছেন সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রে। ভোট দেওয়াটা উৎসব জানিয়ে তিনি বলেন, আমার পরিবার আওয়ামী লীগ করে। আমি প্রত্যেক ইলেকশনেই ভোট দেই। কোনো ইলেকশন বাদ দেই না। এটা একটা আনন্দ। ভোট নষ্ট করতে চান না বলে ভোট দিতে আসছেন বলে জানান আছিয়া বেগম নামে আরেক নারী ভোটার। তিনি বলেন, ভোট তো সব সময় দেওয়া যায় না। একটা দিন সুযোগ আসে এদিন বাসায় বসে ভোট নষ্ট কইরা তো কোনো লাভ নাই। ভোটাভুটির লাইগাই তো সব। ভোট দেওয়া আমার অধিকার, তাই ভোট দিয়েছি। ঢাকা-৯ আসনের হায়দার আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের কেন্দ্রগুলোতে পুরুষের চেয়ে মহিলা ভোট বেশি পড়েছে। হুইল চেয়ারে করে ভোট দিতে আসা শাহিদা বেগমের বয়স ৬৭ বছর। তিনি বলেন, দেশকে ভালোবাসে ভোট দিতে এসেছি।