গতকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ঘিরে জমে উঠেছিল খাবারের ব্যবসা। কেন্দ্রের আশপাশে বসা অস্থায়ী দোকানগুলোতে দেখা গেছে ক্রেতাদের ভিড়। কেউ বিক্রি করেছেন সিঙ্গাড়া, ছোলা-বুট, খিচুড়ি। কেউবা বিক্রি করেছেন চা-কফি ও ফলমূল। ভোট দিতে আসা ভোটার ও প্রার্থীদের হয়ে নির্বাচনি কাজ করা মানুষজন এসব দোকানে ঝটপট সেরে নিয়েছেন নাস্তা ও দুপুরের খাবার। রাজধানীর গুলশান, বাড্ডা, বনানী এলাকার বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রের আশপাশ ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে সিঙ্গাড়া, ছোলা ও ডিম-খিচুড়ি বিক্রি করেছেন আলাউদ্দিন। পেশায় তিনি বাসের হেলপার। ভোটকে ঘিরে ছোট ভাই গোলাম রসুলকে নিয়ে দোকান বসিয়েছেন। আলাউদ্দিন বলেন, ‘বাসে হেলপারি করি। বাস বন্ধ আছে। এজন্য ছোট ভাইটারে নিয়ে দোকান বসাইছি। ভালোই বেচাবিক্রি হচ্ছে। মিথ্যা কইবো না, সকাল থেকে আড়াই হাজার টাকারও বেশি বেচাবিক্রি করেছি।’ দোকানে আলাউদ্দিনকে সহযোগিতা করা গোলাম রসুল তিতুমীর কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি বলেন, ‘ভাই বললেন চল বসে না থেকে দোকান দেই। কাল সন্ধ্যা থেকে প্রস্তুতি নিয়ে আজকে দোকান দিলাম। ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। সবাই গরম গরম সিঙ্গাড়া খাচ্ছে, টাকা আয় হচ্ছে। কোনো ঝামেলা নেই।’ পাশেই আনারস বিক্রি করছেন আমিরুল ইসলাম। তিনি পেশায় তালা-চাবির মিস্ত্রি। আজকে ভোট ঘিরে আনারস বিক্রি করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘তালা-চাবি বানানোর কাজ করি। কয়েকদিন কাজ নাই। আজকে ভোটের দিন। ভোটের সেন্টারে ভিড় হইবো ভাইবা দুইশ’ আনারস কিনে এনে বিক্রি করছি। সকাল থেকে ৬০-৬৫টা বিক্রি করছি।’ আলাউদ্দিনের দোকান থেকে গরম সিঙ্গাড়া কিনে খাওয়া নৌকার সমর্থক শোয়াইব আহমেদ বলেন, ‘বাসা থেকে নাস্তা সেরেই আসছি। তবে এখানে গরম গরম সিঙ্গাড়া দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না। বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নও আছে।’ বাড্ডা হাই স্কুলের পাশে অস্থায়ী চা-পান, সিগারেটের দোকান দিয়েছেন আকতার হোসেন। তিনিও এ পেশার নন। ভোট ঘিরে দোকান দিয়েছেন। ভালো বেচাকেনা হচ্ছে বলেই জানালেন আকতার। তার ভাষ্য, ‘ভোট তো গ্রামে। এখানে বইসা থাইকা কোনো লাভ নাই। সুযোগ তো সব সময় আসে না। আজকে সুযোগ কিছু কামাই করে নিই।’ বনানী বিদ্যা নিকেতন, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, বাড্ডা আলাতুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ আরও বেশ কয়েকটি কেন্দ্রের সামনে অস্থায়ী খাবারের দোকান দেখা গেছে। সকাল থেকেই দোকানগুলোতে উপচেপড়া ভিড় লেগে আছে।