কক্সবাজারের চারটি সংসদীয় আসনের বেসরকারি চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে কক্সবাজার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহিন ইমরান এই ফলাফল চূড়ান্ত করেন।
ঘোষিত ফলাফলে কক্সবাজার ১ চকরিয়া-পেকুয়া আসনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির হাতঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, কক্সবাজার ২ মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিক. কক্সবাজার ৩ সদর-রামু-ঈদগাঁও আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমল এবং কক্সবাজার ৪ উখিয়া-টেকনাফ আসনের আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহীন আক্তার বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। কক্সবাজার জেলার চারটি আসনের ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৯৬০ জন ভোটারের মধ্যে ৬ লাখ ৩১ হাজার ৮৩১ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। যেখানে পোস্টাল ব্যালেটের মাধ্যমে ভোট প্রদান করেছেন চার আসনের চারজন। জেলার চার আসনে প্রদত্ত ভোটারের হার ৩৮.২৭ শতাংশ। ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলের বিবরণী নিম্নরূপ :
কক্সবাজার ১ : কক্সবাজার ১ চকরিয়া পেকুয়া আসনের ১৫৮টি কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত রয়েছে। অপর ১৫৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮১ হাজার ৯৫৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির হাতঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ও সংসদ সদস্য জাফর আলম পেয়েছেন ৫২ হাজার ৮৯৬ ভোট। এই আসনটির মোট ৪ লাখ ৮৬ হাজার ২৫২ জন ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ৪০ হাজার ৬১৩ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। যেখানে ৩ হাজার ৩৩৭টি ভোট বাতিল করা হয়েছে। এ আসনে প্রদত্ত ভোটের হার ২৮.৯২ শতাংশ। এ আসনের যে তিনটি কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত রয়েছে ওই কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ৮০। এ আসনের অপর পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম (হাতুড়ি) পেয়েছেন ৫৩৭ ভোট, জাতীয় পার্টির হোসনে আরা (লাঙ্গল) পেয়েছেন ৭৭৩ জন, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন (মোমবাতি) পেয়েছেন ৬৯১ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলমের ছেলে ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী তুহিন (ঈগল) পেয়েছেন ২৪৪ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুদ্দিন আরমান (কলারছড়ি) পেয়েছেন ১৮০ ভোট। কক্সবাজার ২ : কক্সবাজার ২ মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনে ১১৮টি কেন্দ্রে ৯৭ হাজার ৬০৯ ভোট পেয়ে বেসকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনএফের নোঙর প্রতীকের প্রার্থী শরীফ বাদশা পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৬১৩ ভোট। এ আসনটির মোট ৩ লাখ ৪৮ হাজার ১২৭ জন ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৫৬৮ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। যেখানে ১ হাজার ৫৪২টি ভোট বাতিল করা হয়েছে। এ আসনে প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৩৮.৯৪ শতাংশ।
এ আসনের অপর চার প্রার্থীর মধ্যে ইসলামী ঐক্যজোটের মোহাম্মদ ইউনুস (মিনার) পেয়েছেন ২৭৬ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ’র মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান (চেয়ার) পেয়েছেন ২২৪ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) মোহাম্মদ খায়রুল আমীন (একতারা) পেয়েছেন ১৬০ ভোট এবং ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির (এনপিপি) মাহবুবুল আলম (আম) পেয়েছেন ১৪৮ ভোট।
কক্সবাজার ৩ : কক্সবাজার ৩ সদর-রামু-ঈদগাঁও আসনের ১৭৬টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৬৭ হাজার ৬০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী আইনজীবী ফোরামের নেতা ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ পেয়েছেন ২১ হাজার ৯৪৬ ভোট। এ আসনের ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬১০ জন ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৫০৭ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। যেখানে ৩ হাজার ৩৯০টি ভোট বাতিল করা হয়েছে। এ আসনে প্রদত্ত ভোটের হার ৩৯.৯৩ শতাংশ। এ আসনের অপর ৪ প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তারেক (লাঙ্গল) পেয়েছেন ১ হাজার ৩৭১ ভোট, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন (হাতঘড়ি) পেয়েছেন ৯৮৮ ভোট, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) শামীম আহসান ভুলু (কুঁড়েঘর) পেয়েছেন ৫০৫ ভোট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) মোহাম্মদ ইব্রাহিম (টেলিভিশন) পেয়েছেন ২৬৮ ভোট।
কক্সবাজার ৪ : কক্সবাজার ৪ উখিয়া-টেকনাফ আসনের ১০৪ কেন্দ্রে ১ হাজার ২২ হাজার ৮০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর পেয়েছেন ৩১ হাজার ৭০৭ ভোট। এ আসনের মোট ৩ লাখ ২৬ হাজার ৯৭১ জন ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ৬০ হাজার ১৪৩ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। যেখানে ২ হাজার ৯৫৩ ভোট বাতিল হয়েছে। প্রদত্ত ভোটের হার ৪৮.৯৮ শতাংশ। এ আসনের অপর পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির নুরুল আমিন ভুট্টো (লাঙ্গল) পেয়েছেন ১ হাজার ৭৫৮ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ফরিদুল আলম (আম) পেয়েছেন ৩২৭ ভোট, তৃণমূল বিএনপির মুজিবুল হক মুজিব (সোনালী আঁশ) পেয়েছেন ২৪৬ জন, ইসলামী ঐক্যজোটের মোহাম্মদ ওসমান গনি চৌধুরী (মিনার) পেয়েছেন ৮২৫ জন এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোহাম্মদ ইসমাইল (ডাব) পেয়েছেন ২৪৭ ভোট।