রংপুর অঞ্চলে বেড়েছে মশলা ফসলের চাষ

প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্দুর রহমান মিন্টু, রংপুর

কৃষি প্রণোদনা পাওয়ায় রংপুর অঞ্চলে পাঁচ জেলায় এবার মশলাজাতীয় ফসল পেঁয়াজ ও রসুনের চাষ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। কৃষকরা লাভবান হওয়ায় তারা প্রতি মৌসুমে চাষের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে করে এবার ভোক্তাপর্যায়ে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম নাগালের মধ্যে থাকবে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় এবার পেঁয়াজের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন। অপরদিকে রসুনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৮ হাজার ৮৮০ মেট্রিক টন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এবার রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় ৯ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে ৫২১ হেক্টর বেশি। এরমধ্যে রংপুরে ৩ হাজার ৫১০ হেক্টর, গাইবান্ধায় ১ হাজার ৫৬৯ হেক্টর, কুড়িগ্রামে ২ হাজার ৫০৫ হেক্টর, লালমনিহাটে ৯২০ হেক্টর ও নীলফামারী জেলায় ৮৫১ হেক্টর জমি রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগে এই অঞ্চলের কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে অনেকটা বিমুখ ছিলেন। বাজারে দিনদিন পেঁয়াজের দামের ঊর্ধ্বগতিতে কৃষি কর্মকর্তারা পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় দিন দিন পেঁয়াজ চাষাবাদে ঝুঁকে পড়ার পাশাপাশি জমির পরিমাণও বাড়তে থাকে। মিঠাপুকুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বর্গাচাষি দুলু মিয়া জানান গত কয়েক বছর থেকে রসুন ও পেঁয়াজ চাষ করে ফলন ভালো পাচ্ছেন। তিনি বলেন দাম ভালো হওয়ায় নিজে মসলা জাতীয় ফসল চাষ করতে বেশী অগ্রহী হন। রংপুর নগরীর বড়বাড়ি হিন্দুপাড়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষি বিষ্ণ-ঝাঁ জানান, তিনি গত কয়েক বছর থেকে পেঁয়াজ চাষ করছেন। আগে তিনি ওই জমিতে অন্য ফসল করতেন। পেঁয়াজে লাভের পরিমাণ বেশি হওয়ায় তিনি এবার জমির পরিমাণ বাড়িয়েছেন। পেঁয়াজ আবাদে দ্বিগুণ লাভ পাওয়া যায় বলে জানান তিনি। নগরীর ভোলার পুকুর এলাকার আফজাল হোসেন জানান, গত ৮ বছর থেকে পেঁয়াজ চাষ করে আসছেন তিনি। প্রথমে ৬ শতক জমিতে পেঁয়াজ চাষ শুরু করেছিলেন। এখন চার গুণ জমিতে পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে। লাভের পরিমাণ বেশি হওয়ায় আগামীতে আরো বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ করবেন। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৭০-৮০ থেকে টাকা ও দেশি রসুন ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ দুই বছর এই সময়ে অনেক কম দামে বিক্রি হতো বলে জানিয়েছেন রংপুর সিটি মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে, রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় গতবারের চেয়ে এবার ১১৮ হেক্টর বেশি জমিতে রসুনের আবাদ করা হচ্ছে। এবার মোট জমির পরিমাণ ৩ হাজার ৪৮৪ হেক্টর। এরমধ্যে রংপুরে ১ হাজার ২৭০, গাইবান্ধায় ৩২৬ হেক্টর, কুড়িগ্রামে ৬১৫, লালমনিহাটে ৪৫৭ ও নীলফামারীতে ৮১৬ হেক্টর রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো: ওবায়দুর রহমান মণ্ডল জানান, পেঁয়াজ ও রসুন চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছিল। এ কারণে পেঁয়াজ ও রসুন চাষ বেড়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো বাড়বে বলে জানান তিনি।