মহাখালী ফ্লাইওভারে নান্দনিক চিত্রকর্ম
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর মৌচাক-মগবাজার উড়াল সড়কের পর ঢাকার ব্যস্ততম মহাখালী এলাকার ফ্লাইওভারে ফুটে উঠছে নান্দনিক চিত্রকর্ম। গ্রাম বাংলা এবং দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে এসব চিত্রকর্ম আঁকা হচ্ছে। সম্পূর্ণ কাজ শেষে হতে এখনো বাকি থাকলেও ফ্লাইওভারটি অনেকাংশই ছেয়ে গেছে রঙিন চিত্রকর্মে। নিচ দিয়ে যাতায়াত করা পথচারী থেকে শুরু করে সামাজিক মাধ্যমে এখন ফ্লাইওভারের চিত্রকর্ম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। নগরবাসী বলছেন, এখন জীবন্ত মনে হচ্ছে শহরকে। এভাবে ঢাকার বড় স্থাপনা ও দেওয়ালকে রঙিন করে সাজালে ঝিমিয়ে পড়া শহরকে আরো প্রাণবন্ত মনে হবে। মানুষের রুচি ও ভাবনায় পরিবর্তন আসবে। গত বছরের ডিসেম্বরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের সহযোগিতায় মহাখালী ফ্লাইওভারে স্ট্রিট আর্ট শুরু হয়। আগামী মার্চের মধ্যে পুরো ফ্লাইওভারে এই কাজ সম্পন্ন করা হবে। গতকাল ঘুরে দেখা যায় এরই মধ্যে অর্ধেকের বেশি অংশে চিত্রকর্মের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ চলমান। বাংলা ভাষা, গ্রাম্য মেলার টেপা পুতুল, পাখি, বাউল, নানা আলপনাসহ শহরের রিকশা, বাসের চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে মহাখালীর ফ্লাইওভারজুড়ে। এসব ছাড়াও ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে চলাচল করা মানুষজনের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে ‘গাছা বাঁচাও জীবন বাঁচাও’, ‘হর্ন বাজানো নিষেধ’, ‘বাঁচলে দেশ আমরা বাঁচব বেশ’ এমন নানান স্লোগান লেখা আছে চিত্রকর্মের মাঝে।
মহাখালীর রাওয়া কনভেনশন সেন্টারের সামনে থেকে আমতলী সিগন্যাল পর্যন্ত উড়াল সড়কে মোট ১৪টি খুঁটির সবগুলো সাজবে রঙে। মহাখালী ফ্লাইওভারটি সাজাচ্ছেন মো. রাসেল রানা ও শাকিল মৃধা নামে দুই শিল্পী। তাদের নির্দেশক হিসেবে আছেন আরিফ সিদ্দিক নিটল ও তাহসিনা ফেরদাউস রিনিয়া। চিত্রকর্মের বিষয়ে শিল্পীরা বলেন, মহাখালী ফ্লাইওভার সাজাতে আমরা ফোক সাবজেক্ট বেছে নিয়েছি। কারণ এই চিত্রকর্ম সব শ্রেণির মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য। এছাড়া কালারফুল করতে ফোক এবং দেশীয় আলপনার একটা সমন্বয় করেছি। এতে উৎসব বিষয়টি ফুটে উঠছে। যাতে ক্লান্ত পথিকের মনে রঙ ছুঁয়ে যায়। উপরে চিত্রকর্ম ছাড়াও ফ্লাইওভারের নিচে ফাঁকা জায়গায় টেবিল টেনিস এবং দাবা খেলার বোর্ডের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। ডিএনসিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, শহরকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতেই এই উদ্যোগ। সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি ফ্লাইওভারের বিভিন্ন পিলারে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে, যাতে কেউ এসব চিত্রকর্ম নষ্ট করতে না পারে। এই দৃষ্টিনন্দন স্ট্রিট আর্টের ওপর পোস্টার লাগালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে ঢাকার মৌচাক-মগবাজার উড়াল সড়কেও এ ধরনের চিত্রকর্ম করিয়েছে ডিএনসিসি। যা চলাচলকারী পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। মহাখালী ও মগবাজার ফ্লাইওভার দুটির নিচ দিয়ে যাতায়াত করা সাধারণ জনগণ ফ্লাইওভারজুড়ে বড় রঙিন চিত্রকর্ম দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, ‘মাথার ওপর এত রঙের ছড়াছড়ি যেন উৎসবের আমেজ’।