তিস্তা সেচ ক্যানেলের পাড় ভাঙন

দুই কোটি টাকার বেশি ফসল তলিয়ে গেছে

প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

রংপুর সদর উপজেলার উত্তর মমিনপুর জানপুর মৌজায় তিস্তা সেচ প্রকল্পের রংপুর ক্যানেলের পশ্চিম অংশের পাড় ভেঙে দুইশত একর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে বাঁধটি ভেঙে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্নের আলু, তামাক ও ভুট্টার খেত। গত শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত কোনো কর্মকর্তাই ক্ষতিগ্রস্ত ওই এলাকা পরিদর্শনে আসেনি। কৃষকদের দাবি, এতে দুই কোটি টাকার বেশি ফসল তলিয়ে গেছে।

পানির স্রোতের কারণে জানপুর গ্রামের ত্রাণের টাকায় খারুভাঁজ নদীর সাথে যুক্ত হওয়া একটি খালের উপর নির্মিত একটি ব্রিজে ফাটল দেখা দিয়েছে। বেশ কিছু বাঁশ ঝাড়, গাছপালা ভেঙে গেছে। সেচ ক্যানেলের পাশের জমিতে বালু জমে চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে কৃষকদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, গত প্রায় এক যুগে সাতবার ওই এলাকার পাড় ভেঙে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বিগত সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা প্রতিকার কিংবা ক্ষতি পূরণ না পাওয়ায় এবার অনড় অবস্থানে রয়েছে। ক্ষতিপূরণ না পেলে তারা আর পাড় মেরামত করতে দেবেন না। এজন্য সেচ ক্যানেলের পাশে বসে পাহারা দিচ্ছে তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে ক্যানেলের পাড়টি পুরাতন হওয়ায় এমনটা ঘটেছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রংপুর সেচ ক্যানেল পাড় ভাঙার প্রথম কারণ হলো- ওই এলাকাটিতে রংপুর সেচ ক্যানেলটি ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে সামনে এগিয়ে গেছে। এজন্য ওই বাঁকা অংশে পানির চাপ বেশি সৃষ্টি হয়।

যার কারণে পাড়টি ভেঙে গেছে। দ্বিতীয় কারণটি হলো, রংপুর সেচ ক্যানেলটি সংস্কার কাজ চলছে। অনেক সাইফুন বা পানি বের হওয়ার ছোট ছোট ক্যানেল বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে বেশি পানি ছাড়া হলে পানির চাপে ওই অংশের পাড়টি ভেঙে গেছে। অবশ্য পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইঁদুরের গর্তের ভেতর দিয়ে পানি বের হতে হতে বড় আকার ধারণ করে পাড়টি ভেঙে গেছে। আমজাদ হোসেনের দেড় একর, আজাহার মিয়ার দেড় একর, মোস্তাফিজারের দুই একর জমির আলু তামাক ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তারা জানান, আমাদের সাফ কথা ক্ষতি পূরণ চাই। নইলে বাঁধ মেরামত ঠেকাতে রক্ত দেব। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিতে বারবার এমন হচ্ছে। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম ক্যানেলের পাড় ভাঙার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ক্যানেলের পাড়টি পুরাতন হওয়ায় ৩০-৩৫ ফুট ভেঙে গেছে। এতে কিছু জমির ফসল ক্ষতি হয়েছে।