সরকারি খাস জমি ও খালগুলো দখলদার থেকে উদ্ধার করে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) প্রয়োজনীয় দায়িত্ব আইনগতভাবে পালন করছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি’র মেয়র আতিকুল ইসলাম। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকার নতুন বাজার থেকে পূর্বদিকে ১০০ ফিট সড়কের পাশে সূতিভোলা খালে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও খাল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করার সময় এ কথা বলেন মেয়র। সূতিভোলা খাল, সাতারকুল খালসহ রামপুরা পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার অংশে খালের সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা। এই লক্ষ্যে গতকাল থেকে খালের খাস জমি উদ্ধার অভিযান শুরু করে ডিএনসিসি। খাল উদ্ধার অভিযানে সরেজমিন দেখা যায়, খাল ভরাট করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে রেখেছে। স্থানীয়রা জানায়, এখানে অনন্ত গ্রুপ খালের জমি ভরাট করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছে। অপর পাশে ঢাকা মেট্রোপলিটন খ্রিস্টান কল্যাণ সমবায় হাউজিং সোসাইটি নামে একটি প্রতিষ্ঠান খালের জমি দখল করে নিজেদের সাইনবোর্ড দিয়ে রেখেছে। তবে খালের যেসব অংশে দখল করে এসব প্রতিষ্ঠান সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছিল, তা ভেঙে দিয়েছে ডিএনসিসি।
এ সময় ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, খাল উদ্ধার করে পাশে ওয়াকওয়ে ও সাইকেল লেন নির্মাণ করে দেয়া হবে। এর জন্য যারাই খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে তাদের সবার স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হবে। সরকারি খাস জমি ও খাল উদ্ধার করতে ডিএনসিসি কাউকে কোনো ছাড় দেবে না। মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এখানে সূতিখোলা থেকে রামপুরা পর্যন্ত ২৯ কিলোমিটার খালের পারে ওয়াকওয়ে ও সাইকেল লেন নির্মাণ করে দিবো। এতে খালের সৌন্দর্য, পরিবেশ অনেক অনেকগুণ ভালো হবে। এরই অংশ হিসেবে প্রথমে আমরা ৭ কিলোমিটার অংশের কাজ শুরু করে দিবো। এই নির্মাণ কাজটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দেয়া হয়েছে।
ড্যাপের ম্যাপ অনুযায়ী এই খালের সীমানা নির্ধারণ করা হবে। তিনি বলেন, আমরা যে ৭ কিলোমিটারের কাজ শুরু করেছি আগামী ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি (মধ্যে শেষ করা) আমাদের টার্গেট। এর মধ্যে যখন খালের পারে ওয়াকওয়ে ও সাইকেল লেন করে দিব তখন আর কেউ দখল করতে পারবে না। অনন্ত গ্রুপ খাল দখল করে জমির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না? জানতে চাইলে মেয়র বলেন, অনন্ত গ্রুপ দাবি করছে, এই জমিটি তাদের না। আমার কথা হচ্ছে এই জমি যদি তাদের না হয়, তবে খাল দখল করে সীমানা প্রাচীর দিল কে? ঘটনা স্থালে উপস্থিত অনন্ত রিয়েল স্টেট এর কর্মকর্তা তামান্না রাব্বানী বলেন, এই খাল উদ্ধার হলে এখানে ওয়াকওয়ে ও সাইকেল লেন নির্মাণ করলে আমরাই উপকৃত হবে। এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। খাল উদ্ধার অভিযানে উপস্থিত থাকা ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওয়াকিল উদ্দিন বলেন, আমি অনুরোধ করছি, ঢাকা-১১ আসনের যারা সরকারি জায়গা, খালের জায়গা ও খাস জায়গা দখল করে রেখেছেন, তারা নিজ উদ্যোগে ছেড়ে দেন।