‘আলোকিত মানুষ চাই’ স্লোগানে পথচলার ৪৫ বছর পূর্তি উদযাপন করছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। সব বয়সি মানুষের মাঝে বই পড়ার আনন্দ ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাওয়া বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন যেন এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় শিশু থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ভিড়। তেমনি এসেছেন বয়োজ্যেষ্ঠ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরাও। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনের দ্বিতীয় তলার অডিটোরিয়ামে মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অডিটোরিয়ামে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ভবনটির বিভিন্ন স্থানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে অনুষ্ঠান দেখানো হচ্ছে। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠান চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। অনুষ্ঠানে আসা দর্শনার্থীরা বলছেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৪৫ বছরের পথচলায় অর্জনের শেষ নেই। মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকা অনন্য। আলোর পথের এ যাত্রা অব্যাহত থাকবে বলেও আশা তাদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামিনা সেঁজুতী বলেন, স্কুলে পড়ার সময় থেকেই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে সম্পর্ক।
তখন ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির বই পড়তাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর আগের সেই সম্পর্ক রয়ে গেছে। আমি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের নিয়মিত একজন সদস্য। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আরও অনেক দূর এগিয়ে যাক সেই প্রত্যাশা করি। রাজধানীর নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নীরব বলেন, ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি থেকে নিয়মিত বই পড়ি। এই প্রতিষ্ঠানটি আমাদের বই পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। অনেকে শিক্ষার্থী আছে যাদের সব বই কিনে পড়ার সামর্থ্য নেই। তাদেরসহ সব শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বই পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। ঢাকা বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থী ইশানুল করিম বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এক অনুপ্রেরণার নাম। আমার বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠেছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই দিয়ে। আমি ও আমার বন্ধুরা এখানে এসেছি। অনেক মানুষকে একসঙ্গে দেখে ভালো লাগছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ডিরেক্টর মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন বলেন, আমাদের ৪৫ বছরের পথচলায় অনেক অর্জন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আজ ৩০ লাখ পরিবারের সদস্য। মানুষের মধ্যে আলো ছড়িয়ে দেওয়ার এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। আমরা আলোকিত মানুষ গড়ার কাজটি করে যাবো। আমাদের নিজস্ব ভবন রয়েছে। লোকবল রয়েছে। তবে আমাদের ঘাটতি রয়েছে সম্পদের। এটির পরিপূর্ণতা পেলে বিশ্বসাহিত্য কার্যক্রম আরও এগিয়ে যাবে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র দেশভিত্তিক ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি কার্যক্রম, দেশভিত্তিক ভ্রাম্যমাণ বইমেলা কার্যক্রম, আলোর ইশকুল কর্মসূচি, প্রকাশনা কার্যক্রম, বাঙালির চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহ ও প্রকাশনা কার্যক্রম, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, অনলাইন বইপড়া কার্যক্রম আলোর পাঠশালা ও বিভিন্ন উৎকর্ষধর্মী কর্মসূচি চালিয়ে আসছে।