সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে বিভিন্ন রঙের ফুল। দূর থেকে মনে হতে পারে ফুল, কিন্তু এসব ফুল নয়। এক ধরনের ফুলকপি। উচ্চমান পুষ্টি সমৃদ্ধ নিরাপদ সবজি হিসেবে রঙিন ফুলকপি পরিচিত। ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ ফাঁদসহ জৈব বালাইনাশক বায়ো চমক ব্যবহার করা হয়েছে রঙিন ফুলকপি চাষে। দৃষ্টিনন্দন রঙিন ফুলকপি দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি বাজারে ক্রেতার চাহিদাও বেশি। অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবজি হিসেবে নজর কাড়ছে কৃষি বিভাগ, চাষিসহ ভোক্তাদের। কৃষি বিপ্লবে সাড়া ফেলছে ‘রঙিন ফুলকপি’। রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বিভিন্ন রঙের এই ফুলকপি। জানা গেছে, রংপুর বিভাগ কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রংপুরের তারাগঞ্জে কুর্শা ইউনিয়নের পলাশবাড়ি গ্রামের অবিনাশ চন্দ্র ও ইকরচালী ইউনিয়নের জগদীশপুর গ্রামের মাসুদ রানা পরীক্ষামূলকভাবে উচ্চ মূল্যে নিরাপদ সবজি প্রদর্শনী রঙিন ফুলকপির চাষ করেছেন। কৃষক অবিনাশ চন্দ্র বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় রঙিন ফুলকপির চারা সার কীটনাশকসহ সার্বিক সহায়তা পেয়েছি। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি ওই চারাগুলো রোপণ করেছি। রাসায়নিকের পাশাপাশি জৈবসার ব্যবহার করেছি। সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপি উৎপাদন খরচ কম। প্রায় তিন মাসের মধ্যে ফলন আসে। বাজারে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। প্রতিটি রঙিন ফুলকপি ৫০-৬০ টাকায় জমিতে বিক্রি করেছি। এবারে জমিতে সাদা ফুলকপির চেয়ে ৪-৫ গুন লাভবান হয়েছে এ কপি চাষ করে। প্রতিবেশীসহ আশপাশের লোকজন প্রতিদিন ক্ষেতে দেখতে আসছেন। অন্যদিকে মাসুদ রানা তারাগঞ্জের ইকরচালি ইউনিয়নে নিজের ৩০ শতক জমিতে বাণিজ্যিকভাবে এই রঙিন ফুলকপি চাষ করেছেন। ভালো ফলনের পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে ভালো দামও। বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এসব রঙিন ফুলকপি। মাঝারি আকৃতির একেকটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রথম রঙিন ফুলকপি চাষ শুরু করে। তবে রংপুরে এবারই প্রথম চাষ হচ্ছে। ‘নিরাপদ উচ্চ মূল্য ফসল চাষ’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে রংপুর বিভাগের কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এসব রঙিন ফুলকপি চাষ করা হচ্ছে। এদিকে প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষে অবিনাশ চন্দ্র ও মাসুদ রানার সাফল্যে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তাদের এই রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন কৃষকসহ উৎসুক মানুষ। তাদের কেউ ফুলকপি কিনছেন আবার কেউ চাষের বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন।