গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কর্তৃক যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হকের ৫৫তম শাহাদতবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। ১৯৬৯ সালের এই দিনে তৎকালীন পাকিস্তান বিমান বাহিনীর বাঙালি সদস্য সার্জেন্ট জহুরুল হক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ঢাকা সেনানিবাসে আটক অবস্থায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক নিহত হন। সার্জেন্ট জহুরুল হক ছিলেন একজন স্বাধীনচেতা দেশপ্রেমিক সৈনিক। ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক আরোপিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। পরবর্তীতে ১৭ জানুয়ারি ১৯৬৮ তারিখে ওই মামলার নামকরণ করা হয় ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য’। এই মামলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১ নম্বর এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হককে ১৭ নম্বর আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আইএসপিআর জানায়, পরবর্তীতে এয়ারফোর্স অ্যাক্ট অনুযায়ী সার্জেন্ট জহুরুল হককে ঢাকা সেনানিবাসে বন্দি রাখা হয়। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের উত্তাল আন্দোলনের মুখে আইয়ুব খান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন। কিন্তু এ সময়ই ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ তারিখে সার্জেন্ট জহুরুল হক ঢাকা সেনানিবাসে আটক অবস্থায় পাকিস্তানি সৈনিকের গুলিতে নৃশংসতম হত্যার শিকার হন। দেশের মুক্তির লক্ষ্যে তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্র হলের নামকরণ করা হয় ‘সার্জেন্ট জহুরুল হক হল’ এবং ১৯৮২ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটির নামকরণ করা হয় ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হক’। ২০১৮ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকার কর্র্তৃক স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হকের মৃত্যুদিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামের বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হকের কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ জোহর এক মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মিলাদ শেষে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মিলাদ মাহফিলে ঘাঁটি এয়ার অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল একেএম শফিউল আজম, ওএসপি, জিইউপি, এনডিসি, পিএসসি, ঘাঁটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিমানসেনাসহ বিভিন্ন পদবির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।