আগামী ৯ মার্চ ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচন (মসিক) থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন অ্যাডভোকেট ফারামার্জ আল নূর রাজীব। তবে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে কোনো প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ৯ কাউন্সিলর প্রার্থী। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মেয়র পদে মোট সাতজন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে মহানগরের সহ-সভাপতি অধ্যাপক গোলম ফেরদৌস জিল্লুর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। এরপর বাকি ৬ প্রার্থীর মধ্যে আজ প্রত্যাহারের শেষ দিনে মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন অ্যাডভোকেট ফারামার্জ আল নূর রাজীব। বর্তমানে এই নির্বাচনে মেয়র পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা পাঁচজন। তারা হলেন- সদ্য পদত্যাগ করা সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাদেকুল হক খান (টজু), জাতীয় পার্র্টির প্রার্থী শহীদুল ইসলাম (স্বপন মন্ডল) এবং কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ ড. রেজাউল হক।
এছাড়াও এই নির্বাচনে নগরের ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৬৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলে যাচাই-বাছাই ও আপিলে টিকে থাকে ১৫৮ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ৯ জন মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় বর্তমানে ৩৩ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ১৪৯ জন। তবে ১১টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় এই পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছে ৬৯ জন প্রার্থী বহাল রয়েছে। সূত্রমতে, ঘনিয়ে আসা এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে নগরজুড়ে উত্তাপ ছড়াচ্ছে ভোটের হাওয়া। সেই সঙ্গে প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচার ও প্রচারণায় চলছে ভোট প্রার্থনা।
জানা যায়, দেশের অষ্টম বিভাগ ময়মনসিংহ শহরের ঐতিহ্যবাহী পৌরসভাকে বিলুপ্ত করে ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর সিটি করপোরেশন ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ওই সময় ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন মো. ইকরামুল হক টিটু। এরপর মসিক গঠনের পর টিটুকে প্রশাসক হিসাবে নিযুক্ত করে সরকার। পরে ২০১৯ সালের ৫ মে অনুষ্ঠিত হয় এই সিটি করপোরেশন প্রথম নির্বাচন। সে সময় প্রশাসক পদে বহাল থেকেই নির্বাচনে অংশ নেন টিটু। ওই নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। তবে এবারের নির্বাচনে বিএনপির কোনো প্রার্থী অংশ না নিলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চারজন এবং জাতীয় পার্টি থেকে একজন প্রার্থী নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে এই নির্বাচনে জমজমাট ভোটের লড়াইয়ে আশা করছেন ক্ষমতাসীনরা। তবে একপেশি নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে কোনো আগ্রহ নেই বলে মনে করছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। প্রসঙ্গত, বর্তমান সিটি করপোরেশনে ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯০ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৭১ জন পুরুষ এবং ১ লাখ ৭২ হাজার ৬১০ জন নারী। এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ৯ জন। তারা আগামী ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ১২৮টি ভোটে কেন্দ্রে ভোট প্রদান করবেন। এই লক্ষ্যে সবধরনের প্রস্তুতি এরই মধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম। এফ কোরের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন ও প্রথম কোর পুনর্মিলনী।