দরিদ্র পরিবারের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে সহকর্মীদের রোষানলে চরম বিপাকে পড়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে সহকারী শিক্ষিকা নূপুর আক্তার। উপায়অন্তর না পেয়ে গতকাল রোববার সকালে ওই শিক্ষিকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ওই শিক্ষিকাকে মানসিক নির্যাতন শুরু করেছেন সহকর্মীসহ অন্যান্য শিক্ষক, বিএনপি নেতাদের নিয়ে গঠিত ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্য ও তাদের ভাড়াটিয়া লোকজন। এতে শারীরিকভাবে অসুস্থ শিক্ষিকা নূপুর আক্তার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার সরিকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। গতকাল বিকালে শিক্ষিকা নূপুর আক্তার জানান, ২০১২ সালের ১১ জুলাই থেকে তিনি ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করে ২০২১ সাল পর্যন্ত সুন্দরভাবেই চাকরি করে আসছিলেন। কিন্তু বর্তমান প্রধানশিক্ষক কমল কান্তি সরকার ওই বিদ্যালয়ে যোগদানের পর পরই কতিপয় সহকারী শিক্ষককে নিয়ে নানা অনিয়ম করে আসছেন। কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতন, রাতভর জাতীয় পতাকা টানিয়ে রাখার মতো একাধিক অনিয়ম করেন। এর প্রতিবাদ করায় তাকে (নূপুর) অসংখ্যবার মানসিক নির্যাতন করা হয়। এমনকি উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে প্রধানশিক্ষক কমল কান্তি সরকার তাকে (নূপুর আক্তার) শোকজ করার হুমকি প্রদর্শন করেন। প্রধানশিক্ষকের অনিয়ম মেনে নিতে না পেরে এরইমধ্যে ওই বিদ্যালয়ের দুইজন সহকারী শিক্ষক অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন। নূপুর আক্তার আরও জানান, তিনি দীর্ঘদিন থেকে নিজের বেতনের টাকার একটি অংশ দিয়ে ওই বিদ্যালয়ের দরিদ্র পরিবারের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শিক্ষাউপকরণ ও স্কুলড্রেস দিয়ে আসছেন। বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে চরম বিরোধিতা করেন প্রধানশিক্ষক কমল কান্তি সরকারসহ তার অনুসারী কতিপয় শিক্ষকরা। ফলে বিভিন্নভাবে তার (নূপুর) মানসম্মান ক্ষুণ্ণসহ হেয়প্রতিপন্ন করে আসছেন প্রধানশিক্ষক ও তার অনুসারী শিক্ষকরা। এমনকি স্কুলের লাইব্রেরি থেকে নূপুর আক্তারের বসার চেয়ারটিও গায়েব করে নাজেহাল করা হয়। সহকারী শিক্ষিকা নূপুর আক্তারের সব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধানশিক্ষক কমল কান্তি সরকার বলেন, অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। মূলত তার (নূপুর) স্বামী অঢেল সম্পত্তির মালিক। তাই তিনি কাউকে সম্মান দিয়ে কথা বলেন না।