ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক ও উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে দিনব্যাপী উদ্ভাবন মেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবিষ্কার ও উদ্ভাবনগুলো জনকল্যাণে ব্যবহার করার লক্ষ্যে ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া সম্পর্ক জোরদার করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমাদের গবেষকদের উদ্ভাবনী পণ্যগুলো বাজারজাত করতে দেশের বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে শিগগিরই আলোচনা করা হবে। বর্তমান ‘নলেজ ইকোনমির’ যুগে টিকে থাকতে হলে অবশ্যই আমাদের নতুন ধারণা উপস্থাপন ও পণ্য উদ্ভাবন করতে হবে। উদ্ভাবনী ধারণাগুলো গবেষক ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, তাহলেই আন্তর্জাতিক শিক্ষা মানচিত্রে আমরা টিকে থাকতে পারব।
গবেষকদের উদ্ভাবনী পণ্য ও সেবার বিকাশ ঘটাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিগগিরই ‘স্টার্ট আপ স্টুডিও’ প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে তিনি জানান। ‘ক্রাউড ফাইন্যান্সিং সিস্টেম’ প্রবর্তনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করে ‘স্টার্ট আপ’ চালু করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। মানসম্মত গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার উপর তিনি জোর দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবন-ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে তিনি প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। দিনব্যাপী উদ্ভাবন মেলায় মোট ১০০টি উদ্ভাবনী ধারণা উপস্থাপন ও পণ্য প্রদর্শন করা হয়। এর মধ্যে ৪০টি উদ্ভাবনী পণ্য এবং ৬১টি সার্ভিস ইনোভেশন আইডিয়া প্রদর্শিত হয়। মেলায় স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পাটজাত পণ্য উৎপাদন, বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ের সহজ পদ্ধতি, পরিবেশ ও পানি দূষণ প্রতিরোধে টেকসই পদ্ধতি, এনজাইম ব্যবহারের মাধ্যমে চামড়ার গুণগত মান বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ফল ও শাকসবজি সংরক্ষণের পদ্ধতি, রাসায়নিক পদার্থমুক্ত চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতি, অটোমেশন অব টেবুলেশন সিস্টেম, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ বিষয়ক মোবাইল অ্যাপ তৈরি, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সংক্রান্ত সমস্যা নির্মূলকরণ ও বাস ট্র্যাকিং সিস্টেম, স্টুডেন্ট মনিটরিংসহ বিভিন্ন উদ্ভাবনী ধারণা ও পণ্য প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ‘ফান্ডিং ইনোভেশন : হাউ, হোয়াট অ্যান্ড হোয়াই অব সাকসেসফুল কেইজেস?’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাটাসফ্ট সিস্টেমস বাংলাদেশ এর সভাপতি এম. মানজুর মাহমুদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইনোভেশন টিমের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ইসতিয়াক এম সৈয়দ স্বাগত বক্তব্য দেন। অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড লিডারশিপ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রাশেদুর রহমান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।