স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, এডিস মশার প্রকোপ কমাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জন্য ৫ কোটি ও সারাদেশের জন্য ৪০ কোটি টাকার ওষুধ কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের জনসচেতনতা বাড়াতে ও প্রচারণায় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
গতকাল বুধবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় ও শেষ অধিবেশনে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়নও সমবায় মন্ত্রণালয়ের কার্য অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। তাজুল ইসলাম বলেন, পুরো পৃথিবী অনুধাবন করছে যে এডিস মশা মোকাবিলা করতে হলে সবচেয়ে বেশি দরকার বা হাতিয়ার ৯০ শতাংশ সচেতনতা। আর বাকি ১০ শতাংশ টেকনিক্যাল বা ওষুধ। তিন দিনে একদিন জমা পানি ফেলে দিন। এটা যদি সম্ভব হয় তাহলে এডিস মশার প্রজননটা আমরা রোধ করতে পারবো। আগে যদি আমরা ঢাকার বাইরে এক পারসেন্ট এডিস মশার প্রকোপ দেখতাম, বাকি ৯৯ শতাংশই কিন্তু দেখা যেত ঢাকা শহরে। গত বছর এডিস মশার প্রকোপ ঢাকায় কমে নেমেছে ২০ শতাংশের নিচে। কিন্তু ঢাকার বাইরে হয়েছে ৮০ শতাংশ। তিনি বলেন, প্রতিদিন আগে যে পরিমাণ আমাদের সন্তান বা মানুষ ঢাকায় আক্রান্ত হতো। এখন তা হচ্ছে ঢাকার বাইরে অর্থাৎ ঢাকার মানুষ এখন অনেক সচেতন হয়েছে। এডিস মশাকে মোকাবিলা করার জন্য আমরা যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য টিভিসি প্রচার করেছি, মানুষ সেটা দেখে দায়িত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। এসব কারণে ঢাকায় এডিস মশার প্রকোপ কমেছে ও সফলতা এসেছে বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
এ ব্যাপারে ডিসিদের কী বলেছেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা এই অবস্থাটা জানিয়েছি। তাদেরকে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে এখনই ইনিশিয়েটিভ নেওয়ার জন্য। তারা জনসচেতনতার জন্য লিফলেট বিতরণ করছেন। তাছাড়া মন্ত্রণালয় থেকে যেসব সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন টেলিভিশনে প্রচার করা হচ্ছে তাতেও গ্রামাঞ্চলের মানুষও সচেতন হচ্ছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি সঠিকভাবে দেখভাল করা হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে ডিসিদের মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ডিসিরা তো তদারকি করবেন। আর রিপোর্ট করবেন। আর কার কি দায়িত্ব সেটা তো বণ্টন করে দেওয়াই আছে। আমরা কিন্তু গত জানুয়ারিতেই সভা করেছি। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এলাকা ধরে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। গত বুধবারে সভা করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জন্য ৫ কোটি টাকার ওষুধ কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আর সারা দেশের জন্য ৪০ কোটি টাকার ওষুধ কেনার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তুতিগুলো চলমান। মন্ত্রণালয় তথা সরকারের পক্ষ থেকে যে সমস্ত পদক্ষেপ, জনসচেতনতায় প্রচারণা দরকার তা করা হচ্ছে।
সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকেন্দ্রীক কোনো নির্দেশনা ডিসিদের দেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন তো হয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন যেসব সহযোগিতা চায় তা করব। তবে নির্বাচন সম্পর্কে আমাদের কোনো ইন্টারভেনশন বা ইন্টারফেয়ার নেই। নির্বাচনের ব্যাপারটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বের অংশ নয়। এটা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। নির্বাচন কমিশনকে এ ব্যাপারে পুরো ক্ষমতা দেওয়ার আছে।