নারীর ক্ষমতায়ন ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করাসহ ৮ দাবি

প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বৈষম্য দূর করতে জাতীয় বাজেট তৈরির সময় জেন্ডার-সমতাকে প্রাধান্য দিতে হবে। নারী নির্যাতন এবং হয়রানি সংক্রান্ত অভিযোগগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করাসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে পোশাক খাতের ট্রেড ইউনিয়নগুলোর নারী নেত্রীরা। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির (বিসিডাব্লিউএস)। লিখিত বক্তব্যে বিসিডাব্লিউএসের নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার বলেন, নারী অধিকার ও উন্নয়নের মধ্যে মানবজাতির সার্বিক কল্যাণ নিহিত। অথচ স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও অসম ক্ষমতার চর্চা নারী অধিকার প্রতিষ্ঠাকে রুদ্ধ করে রেখেছে। অর্থনীতিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রাখা নারীদের অধিকার, মর্যাদা রক্ষায় পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই। পোশাকখাতে কর্মরত নারীদের অধিকার ও সুরক্ষা বাস্তবায়নে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মানববন্ধনের বক্তারা বলেন, পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। এখাতে কর্মরত অধিকাংশ নারী শ্রমিকরা দেশের জিডিপির সিংহভাগ জোগান দেয়। এখাতে নারী শ্রমিকরা বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার। উচ্চ আদালতে দায়েরকৃত রিট পিটিশনে (৫৯১৬/২০০৮) যৌন হয়রানি ও সহিংসতা দূরীকরণে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা থাকলেও তদারকির অভাবে নারীর প্রতি অপরাধ দিন দিন বাড়ছে। নারীর অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষায় আইন ও বিধি কার্যকর এবং যথাযথ প্রয়োগের দাবি জানান বক্তারা। নারী শ্রমিকদের অধিকার বাস্তবায়নে ৮ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন তারা। সুপারিশগুলো হলো-১) আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুস্বাক্ষর করতে হবে। ২) কর্মক্ষেত্রে উচ্চ-আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যকরী যৌন হয়রানী প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে। ৩) অবিলম্বে কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ও হয়রানী বন্ধে পূর্ণাঙ্গ আইন ও বিধি গ্রহণ করতে হবে এবং তা বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ৪) জাতীয় বাজেট তৈরির সময় জেন্ডার-সমতাকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। ৫) নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক ও আগ্রাসী মনোভাব, পুরুষতান্ত্রিক অসম-ক্ষমতার চর্চা রুখতে সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরে নারীর অধিকার বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। ৬) নিরাপদ কর্মপরিবেশ, কর্মক্ষেত্রে এবং গণপরিবহনে নারী শ্রমিক তথা সব নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ৭) শ্রম আইনের সংস্কার এবং ব্যর্থতায় কঠোর শাস্তির বিধান নিশ্চিত করতে হবে। ৮) নারী নির্যাতন এবং হয়রানী সংক্রান্ত অভিযোগগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিসিডাব্লিউএসের প্রকল্প কর্মকর্তা হালিমা আক্তারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নারী নেত্রী আঞ্জু আক্তার, সোয়েদা আক্তার নিশি আক্তার আইরিনসহ পোশাক খাতের বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের নেত্রীরা।