কয়েকদিন আগে বেইলি রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের প্রভাব পড়েছে সেখানকার ইফতারির বাজারে। এতে ছোট হয়েছে আয়োজন, কমেছে ক্রেতাও। রাজধানীর বেইলি রোড মূলত নাটকপাড়া বলে পরিচিত। তবে পবিত্র রমজান মাসজুড়ে এই এলাকা আলাদা পরিচিতি পায় অভিজাত ইফতার বাজার হিসেবে। সড়কের দুই পাশের ফুটপাতগুলোতে বসে অস্থায়ী সব খাবারের দোকান। তবে এবারের দ ৃশ্যপট অনেকটা ভিন্ন। দোকানের সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম। সম্প্রতি বেইলি রোডের কোজি টাওয়ারের ভয়াবহ দুর্ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। ওই ঘটনার পর বেইলি রোডে অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে প্রথম রমজানে (সোমবার ১২ মার্চ) ক্রেতাদের তেমন আনোগোনা নেই বেইলি রোডের ইফতার বাজারে। বেইলি রোড ঘুরে দেখা গেছে, একাধিক রেস্তোরাঁ খোলা থাকলেও ইফতার বিক্রি করছে মাত্র ৭টি প্রতিষ্ঠান। ফুটপাতে ইফতার নিয়ে কাউকে বসতে দেখা যায়নি। পেয়াজু, চপের পাশাপাশি এসব দোকানে মিলছে হরেক পদের ইফতারিসহ নানা মুখরোচক খাবার। বিক্রেতারা বলছেন, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে তারা আশা করছেন ট্র্যাজেডি ভুলে ক্রেতারা আবার বেইলি রোডে আসবেন। জাগেরি রেস্তোরাঁয় গিয়ে দেখা মেলে চাপ, কাবাব, গরুর মাংসের আইটেমসহ নানা মুখরোচক খাবারের। এখানে চিকেন সিঙ্গারা ৬০ টাকা, কাটলেট ৯০ টাকা, লেগপিস ৯০ টাকা, ফিস ফিঙ্গার ৭০ টাকা, গরুর তেহারি ২৯০, মোরগ পোলাও ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাবাব আইটেমসহ ১০০ ইফতার পণ্য বিক্রি করছে তারা। জাগেরির ম্যানেজার নাজমুল হোসেন বলেন, মানুষ এখনও আতঙ্কিত। রেস্তোরাঁ খোলা কম দেখে আমাদের এখানে বেচাকেনা ভালো। তবে অনেক রেস্তোরাঁই এবার ইফতারির আয়োজন করছে না।
আগুনে পুড়ে যাওয়া কোজি টাওয়ারের একটু সামনেই এ ওয়ান রেস্তোরাঁ। সেখানেও বিক্রি হচ্ছে মুখরোচক ইফতার। দোকানের ম্যানেজার পারভেজ বলেন, যেটা ঘটেছে সেটা ট্র্যাজেডি। এবার ইফতার বাজার কেমন হয় অনুমান করতে পারছিনা। এজন্য এবার আমাদের প্রস্তুতি ও সীমিত। মাত্র ৫০ আইটেম করেছি। আমরা নিয়ম মেনে ব্যবসা করতে চাই। এজন্য পুলিশ প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এদিকে ক্রেতারা বলছেন ভিন্ন স্বাদের ইফতারের স্বাদ গ্রহণ করতে তারা বেইলি রোডে এসেছেন। তবে এবার পরিসর অনেক ছোট দেখে হতাশ তারা। আবার অনেকে সে বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়েছে। সাইমুম নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, এখন সবাই নিয়মের মধ্যে এসেছে। ফুটপাতে কেউ নেই। আগের ঘিঞ্জি পরিবেশটা নেই। একটা দুর্ঘটনা হয়েছে, আমরা কেউ চাই না এর পুনরাবৃত্তি হোক।