বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে ১০ বছর আগে কিডনি রোগীর সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি। বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ কোটি। বৃদ্ধির হার এতই বেশি যে অদূর ভবিষ্যতে এটা মহামারির আকার ধারণ করতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি। তাদের মধ্যে আকস্মিক কিডনি রোগীর সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ হাজার (প্রতি বছর), দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীর সংখ্যা ৩৫ থেকে ৪০ হাজার (প্রতি বছর)। বাংলাদেশে কিডনি রোগের চিকিৎসক রয়েছে ৩০০ জন। বর্তমান বিশ্বে কিডনি রোগের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দুইটি কিডনির প্রতিটিতে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ ছাকনি রয়েছে। মানুষের জন্ম গ্রহণের ৬ সপ্তাহের মধ্যেই কিডনির ছাকনি বা ফিল্টার মেমব্রেন পুরোপুরি তৈরি হয়ে যায়। অর্থাৎ, কিডনি পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারে। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ২০০ লিটার রক্ত পরিশোধিত করে। এই পরিশোধিত রক্তের মধ্যে ১ থেকে ৩ লিটার শরীরের বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেওয়া হয়। সুতরাং, কোনো কারণে যদি এ ধরনের ফিল্টার বাধাপ্রাপ্ত হয় তখন আকস্মিক বা দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ হতে পারে। কিডনির কার্যকারিতা যাচাই করার জন্য রক্তে ক্রিয়েটিনিন নামক জৈব পদার্থ পরিমাপ করা যায়, যার মাধ্যমে কিডনি কতটুকু কাজ করছে তা বোঝা যায়। রক্তে ক্রিয়েটিনিন ছাড়াও প্রস্রাবে নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি প্রোটিন বা এলবুমিন থাকলে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ আছে বলে ধরা হয়। বাংলাদেশে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের শতকরা প্রায় ১৮ ভাগ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে ১১ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ শতাংশ এবং আইসল্যান্ডে ১০ শতাংশ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। বিএসএমএমইউর কিডনি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন থেকে ইউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. তৌহিদ রমা সাইফুল ইসলাম দিপু, কিডনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এএইচ এম হামিদ আহমেদ, অধ্যাপক ডা. কেবিএম হাদিউজ্জামান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক প্রমুখ।