রাজধানীর ফুটপাতে জমতে শুরু করেছে ঈদবাজার
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদের এখন প্রায় দিন দশেক বাকি। এরইমধ্যে রাজধানীর শপিং মলের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানগুলোতে বেচাবিক্রি জমতে শুরু করেছে। তুলনামূলক কম দামে পছন্দের পোশাক, গয়না, জুতা, স্যান্ডেল, প্রসাধনীসহ অন্যান্য পণ্য কিনতে ফুটপাত ও খোলা জায়গায় বসানো অস্থায়ী দোকানগুলোতে ভিড় করছেন নিম্নআয়ের মানুষরা।
গতকাল শনিবার রাজধানীর কলাবাগান, নিউমার্কেট, সায়েন্সল্যাব ও গ্রিন রোডের ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানগুলোতে মানুষের ভিড় দেখা যায়। বিক্রেতারা কাঠের চৌকিতে পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট, বাচ্চাদের জামাসহ নানা ধরনের জিনিসের পসরা নিয়ে বসেছেন। বিক্রেতাদের হাঁকডাক ও ক্রেতা-বিক্রেতার দরদামে চলছে ঈদের কেনাকাটা। ফুটপাতের অধিকাংশ দোকানে ছেলেদের পোশাক বেশি পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে প্যান্ট, শার্ট, টিশার্ট ও পাঞ্জাবি। বিক্রি হচ্ছে মেয়েদের পোশাকও। দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, একেকটি প্যান্ট ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পাঞ্জাবি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, শার্ট ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের টিশার্ট ১৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। আর বাচ্চাদের পাঞ্জাবি থেকে শুরু করে শার্ট, টিশার্ট, জিন্স, প্যান্ট ও জুতা পাওয়া যাচ্ছে। এসব পণ্য ৫০ থেকে শুরু ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। কোরবান আলী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এবারের ঈদে অফিস ছুটি দেবে কি না, এখনও নিশ্চিত নয়। তার ঈদ করতে বাড়িতে যাওয়া হোক বা না হোক সন্তানদের জন্য নতুন জামাতো পাঠাতেই হবে। তাই রাজধানীর মিরপুর রোডে ফুটপাতের একটি দোকান থেকে মেয়ে রাইসার জন্য জামা দরদাম করছিলেন কোরবান। তিনি বলেন, মেয়েটার জন্য নতুন জামা কিনতে আইছি। বাড়িতে যাইতে না পারলেও কারও কাছে মেয়েটার জন্য জামা পাঠাইয়া দিমু। কয়েকটা দোকান দেখছি, দাম বেশি চায়। চন্দ্রিমা সুপার শপের সামনের ফুটপাতে বাচ্চাদের জন্য কেনাকাটা করছিলেন মো. মামুন। তিনি বলেন, গ্রামের বাড়িতে ঈদ করব। ভাগ্নে-ভাতিজাদের জন্য কিছু কেনাকাটা করছি। আস্তে আস্তে কিনে রাখি। ভাগিনার জন্য জিন্স ও শার্ট নিছি। ফুটপাতে খুঁজে নিতে পারলে ভালো জিনিসও আছে। আর কম দামে পাওয়া যায়।
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিম্নআয়ের মানুষের পাশাপাশি অনেক নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোকজনও তাদের দোকানে কেনাকাটার জন্য আসছেন। ঈদের কেনাকাটা শুরু হলেও সেই অর্থে ছুটির দিন ছাড়া বিক্রি কম। তবে সবার হাতে বেতন চলে আসলে বিক্রি জমে উঠবে বলে আশা তাদের।
নিউ মার্কেটের অপর প্রান্তে একটি অস্থায়ী কাঠের চৌকিতে বড়দের পাঞ্জাবি বিক্রি করছিলেন আলতাফ হোসেন। তিনি বলেন, ঈদের বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে এখন যে পরিমাণ মানুষ দেখছেন, এদের অনেকে দেখতে আসছেন। মানুষ এখনও বেতন পায়নি। মাসের শেষে বেতন-বোনাস পেলেই আমাদের বিক্রি ভালো হবে। এখন যা বিক্রি করছি সেটাও একেবারে খারাপ বলা যায় না। আলতাফের দোকান থেকে কয়েক কদম সামনে যেতেই এক দোকানিকে বিক্রি কেমন বলতেই বিরক্ত হয়ে বলেন, মানুষ রোজার দিন বাসায় রেস্ট করব, তা না মার্কেটে আইসা হুদাই বিরক্ত করে। দাম জিগাইয়া যায় গা।