আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, বুয়েটে যারা ছাত্র রাজনীতির বিপক্ষে কথা বলে তারা গণতান্ত্রিক শক্তি নয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি কখনোই এই ধরনের কথা বলতে পারে না। এরা সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী শক্তি। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর মতো বুয়েটেও গণতান্ত্রিক চর্চা করার সুযোগ দিতে হবে। এই সুযোগকে যদি কেউ বাধাগ্রস্ত করে সেটি হবে অগণতান্ত্রিক। দেশের ছাত্র ও যুবসমাজ কখনোই এটি মেনে নেবে না।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর পল্টন কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার পক্ষে ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের নামে বুয়েটে ছাত্রদের ঐতিহ্যবাহী ও গৌরবান্বিত ভূমিকা একটি গোষ্ঠী অস্বীকার করছে। এই বুয়েটের বহু শিক্ষক ও ছাত্র মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে জীবন দিয়েছিলেন। আজকে সেই বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের নামে বাংলাদেশের রাজনৈতিক গগনে গণতান্ত্রিক শক্তি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অবমাননা করা হচ্ছে। এক দেশে দুই আইন চলতে পারে না। সারা বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতি করার জন্য সংবিধান অধিকার দিয়েছে। নাছিম বলেন, যারা মানুষকে নিয়ে ভাবে না, মানুষের বেদনা, কষ্টকে অনুভব করতে পারে না, তারাই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের শান্তি ও সম্প্রীতির উপর আঘাত আনতে চায়। এরা বারবার ষড়যন্ত্রের নীলনকশা আঁকে। এরা বার বার অপশক্তিকে ইশারা দিয়ে আমাদের গণতন্ত্রকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে সবসময় লিপ্ত থাকে। তারা সব সময় স্বৈরাচারী শক্তিকে মদদ ও সমর্থন দেয়।
তিনি বলেন, বিএনপি নিজেদের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে দাবি করে অথচ তাদের দেখি নামিদামি রেস্তোরাঁয় বসে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতিদের সঙ্গে ইফতারে অংশগ্রহণ করে। তারা রাজাকারদের সঙ্গে বিলাসী কায়দায় ইফতার গ্রহণ করে ধন্য হয়। তারা আবার বলে বেড়ায় আমাদের মাত্র দুই ডজন কেন্দ্রীয় নেতা অংশগ্রহণ করেছে। মির্জা ফখরুল অসুস্থ থাকায় নাকি রাজাকারদের ইফতারে যেতে পারেনি। এরা নাকি এখনও দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সংগ্রাম করছে। এদের সংগ্রাম হলো দালালদের সঙ্গে বিলাসী ইফতার আয়োজন। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। আমাদের রাজনীতিই হলো দেশের মানুষের জন্য। এটাই হলো আওয়ামী লীগের নীতি ও শেখ হাসিনার নির্দেশ। দেশের সকল দুর্দিন ও দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে ছিল। করোনাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মানুষকে অক্সিজেন, খাদ্যসামগ্রী, দাফন-কাফন সৎকার সর্বক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে। তারা কৃষকদের ধান কেটে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে। এ পবিত্র রমজান মাসেও আমরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। ইফতারসামগ্রী মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। ঈদসামগ্রী আমরা মানুষের কাছে পৌঁছে দেব।
বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ম আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আফজালের রহমান বাবুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দি এবং ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন এবং সাধারণ সম্পাদক তারিক সাঈদ। এরপর বিকালে বাহাউদ্দিন নাছিম মতিঝিল শাপলা চত্বরে স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের আয়োজনে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অসহায় ও দুঃস্থদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।