রংপুর বিভাগে মাদক বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না

প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় মাদক বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না। এ বিভাগের সীমান্ত সংলগ্ন ৬ জেলার কোনো না কোনো পথ দিয়ে প্রতিদিনই আসছে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। মাঝেমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে আটক হলেও এর মাস্টারমাইন্ডরা থেকে যাচ্ছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। অথচ নিয়মিত অভিযান, গ্রেপ্তার, মামলা ও সচেনতামূলক সভা হলেও কমছে না মাদকসেবীর সংখ্যা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সীমান্ত এলাকা কড়াকড়ি না হলে মাদকের বিস্তার রোধ করা সম্ভব নয়। জানা গেছে, রংপুর বিভাগের ৮ জেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় মাদকদ্রব্য কেনাবেচা হচ্ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মাদকসেবীর সংখ্যা। প্রায়সময় মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও মাদকসেবীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরপরও প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আলী আসলাম হোসেন জানান, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত রংপুর বিভাগের রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলা থেকে ২ লাখ ২২ হাজার ইয়াবা, ৩৫ হাজার ৩৭৪ বোতল ফেনসিডিল, সাড়ে ৩ কেজি হেরোইন, ৩ হাজার ৩৭০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

এছাড়াও বিপুল পরিমাণ টাপেন্ডা ডল, সিডাকসিডল ট্যাবলেট, ইনজেকশন, দেশি মদ, বিদেশি মদ, বিয়ার, স্পিড, মদ তৈরির কাঁচামাল, তাড়ি, চোলাইমদ উদ্ধার করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে ৩ কোটি ৫২ লাখ ২৯ টাকা, ৩৬টি মোবাইল, ১৩৯টি মোটরসাইকেল, ১২টি পিকআপ ও ৪৫টি ইজি বাইক। তিনি জানান, গত ৫ বছরে নিয়মিত অভিযান হয়েছে ২১ হাজার ৪৮৭টি, ভ্রাম্যমাণ আদালত হয়েছে ১৮ হাজার ৮৫১টি, নিয়মিত মামলা ৩ হাজার ৭৮৬টি, ভ্রাম্যমাণ আদালতে মামলা হয়েছে ৭ হাজার ৫৯৮টি ।

এ সময় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩ হাজার ৩৩০ জন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে ৫ হাজার ৭৯৮ জনের। পালাতক রয়েছে ১ হাজার ৪৭৩ জন। মাদক নিয়ন্ত্রণে গণসচেনতামূলক কার্যক্রম চালু রয়েছে। এরমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা। মাদককে নিরুৎসাহিত করতে পাড়া মহল্লায় মাইকিং, পোস্টার, স্টিকার লিফলেট বিতরণ ও ডুকোমেন্টরী প্রর্দশন করা হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মাদকবিরোধী, সভা, সেমিনার শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হচ্ছে। কারাবন্দিদের মাঝে মাদকবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আলী আসলাম হোসেন জানান, বাংলাদেশে চোলাইমদ ছাড়া অন্য কোনো মাদকদ্রব্য তৈরি হয় না। মাদকগুলো আসে বিভিন্ন দেশ থেকে। এজন্য সীমান্ত, পানি পথ, পোর্ট ও বিমানবন্দরে কড়াকড়ি অবস্থা থাকলে মাদকের বিস্তার রোধ করা সম্ভব।