রাজশাহীর বাঘায় সূর্যমুখী চাষে কৃষকের হাসি

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  বিজয় ঘোষ, রাজশাহী ব্যুরো

রাজশাহীর বাঘার খানপুর এলাকার কৃষক সালাম আলী, রাব্বি হোসেন ও কামরুল ইসলাম। এবারই প্রথম সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। তার পাশের ২ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন কার্তিক প্রামানিক ও তার ভাই গনেশ প্রামানিক। কৃষি বিভাগের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে এই সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের খানপুর গ্রাম। নদীর তীর রক্ষা বাঁধের বাঘা-লালপুর সড়ক হয়ে যাওয়ার পথে গ্রামটির দক্ষিণে পদ্মার চরে অসংখ্য সূর্যমুখীর খেত নজর কাড়ে। আর সূর্যমুখীর বাগানগুলো এখন প্রকৃতপ্রেমীদের উপভোগের বিষয় হয়ে উঠেছে। কেউ এসে সেই খেতের ছবি তুলেন, কেউবা পরিবার পরিজন নিয়ে আসেন সৌন্দর্য উপভোগ করতে। বিকালে সূর্যমুখীর বাগানগুলো প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড় থাকে বেশি। সূর্যমুখীর চাষ চাষিদের জন্য সুখবর বয়ে এনেছে। অন্য ফসল ছেড়ে এবার এ ফুলের চাষ করছেন এলাকার কয়েকজন কৃষক। তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে সূর্যমুখী ফুলচাষ।

কৃষক সালাম আলী জানায়, ১ বিঘা জমি লীজ নিতে লেগেছে ২০ হাজার টাকা। জমির লীজ বাদে, বিঘা প্রতি ২৫ হাজার টাকা খরচ করে সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে ৩ জন মিলে সূর্যমুখী লাগিয়ে ছিলাম। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা।

কৃষক রাব্বি হোসেন জানান, আখ কেটে সাথী ফসল হিসেবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। এরইমধ্যে গাছে ফুল এসেছে জানান।

কৃষক কার্তিক প্রামানিক বলেন, তারা দুই ভাই ধানের পাশাপাশি সবজির আবাদ করেন। তবে কৃষি অফিসারের পরামর্শে এবারই প্রথম দুই ভাই ২ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী আবাদ করেছে। কৃষি অফিস থেকে তাদের বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। তাদের পরামর্শে পরিচর্যা করছেন। খেত ভালো হইছে। গড়গড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, মাঠ ভরা সূর্যমুখী ফুল দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় তাদের। বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, পরীক্ষামূলক এ বছর উপজেলার সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। এ ফুল রোপণের ১১০ থেকে ১২০ দিনের মাথায় ফুল থেকে বীজ পাওয়া যায়। মাটির আদ্রতা বুঝে ২ বার সেচ দিতে হয়। পোকাণ্ডমাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাই তেমন হয় না। সূর্যমুখীর বীজের তেল স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অন্যান্য তেলবীজে যেসব ক্ষতিকারক উপাদান (বিশেষ করে কোলেস্টেরল) থাকে, সূর্যমুখীতে তা নেই। এসব জমির অধিকাংশ গাছে ফুল ধরেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শতভাগ জমিতেই ভালো বীজ পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মোছাঃ সাবিনা বেগম বলেন, দেশের মানুষের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতসহ তেল জাতীয় ও দানা জাতীয় ফসলের প্রযুক্তি বিস্তারে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় সূর্যমুখী ফুলের আবাদ করা হয়েছে। সূর্যমুখীতে উপকারী উপাদান ও পুষ্টিগুণ বিদ্যমান।