খুলনায় দেশের শ্রেষ্ঠ দুই জাতের ধান চাষে বাম্পার ফলন

প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  খুলনা প্রতিনিধি

খুলনার শস্যভান্ডারখ্যাত ডুমুরিয়া উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে দেশের শ্রেষ্ঠ দুই জাতের ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রথমবারের মতো ব্রি ধান ১০৪ ও বিনাধান ২৫ এর বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক।

লম্বা ছড়ায় চিকন সুগন্ধি এ দুই জাতের ধানের ফলনে এলাকায় সাড়া পড়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার কার্তিকডাঙ্গা বিলে ব্রি ধান ১০৪ ও বিনাধান ২৫ এর বাম্পার ফলন দূর থেকে দেখলে মনে হয় কে যেন পাটিতে ধান বিছিয়ে দিয়েছে।

ধানের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছ। আশপাশের অনেকেই দেখতে আসছেন এর ফলন। ধানে কোনো রোগবালাই লাগেনি বা বাতাসে হেলে পড়েনি। জীবনকাল ব্রি ধান ২৮ এর মতো হওয়ায় আগেভাগেই ধানে পাক ধরায় কৃষক ঘরে তুলতে পারবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এ ধান চাষের উদ্যোক্তা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক এসএম আতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে জানান, বরাবরই তিনি উন্নত জাতের ধানের আবাদ করে থাকেন। এবার যে দুটি জাতের ধান একই জমিতে পাশাপাশি তিনি করেছেন তা দেশে এ পর্যন্ত উদ্ভাবিত শ্রেষ্ঠ জাতের ধান। এ জাত দুটি হারিয়ে যাওয়া বালাম ধানের চেয়েও আরেক ধাপ উন্নত।

এলাকার কৃষক মো. আনিস শেখ জানান, তিনি এর আগে চিকন ধানের এত ফলন দেখেননি। এ ধানের ফলন দেখে আগামী মৌসুমে বীজ নিয়ে তিনি চাষ করবেন। খুলনার প্রাক্তন কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি এ ধানের ফলনে অত্যন্ত আশাবাদী। কৃষির এ সাফল্য নতুন আশার আলো। দেশে এ দুটি জাত কৃষকের মধ্যে দ্রুত সম্প্রসারিত হবে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাতক্ষীরা উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তমাল পাত্র শুভ খেত পরিদর্শনকালে বাংলানিউজকে বলেন, ব্রি ধান ১০৪ বোরো মৌসুমের একটি সুগন্ধি বাসমতি ধান। এর ফলন হেক্টরে ৭ টনের ওপরে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন ৮ থেকে সাড়ে ৮ টন হয়ে থাকে। এ ধানের ভাত ঝরঝরে হয়।

এছাড়া সুগন্ধির কারণে এর মার্কেট ভেল্যু অনেক বেশি। এ ধান চাষে কৃষক বেশ আগ্রহী। এ বছর পার্টনার প্রকল্পের আওতায় বেশ কিছু জায়গায় প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। খুলনাঞ্চলে এ ধানের চাষ প্রথম।

ব্রি ধান ৫০ থেকে ১৫-২০ শতাংশ ফলন বেশি হয় ব্রি ধান ১০৪ এ। বিনাধান ২৫ ছাড়াও এ খেতে পাশাপাশি ব্রি ধান ১০৪ এবারই মাঠপর্যায়ে এ এলাকায় প্রথম চাষ করা হয়েছে। এ ধানের ফলনও আশাব্যঞ্জক। ব্রি ও বিনার বিজ্ঞানীরা জানান, প্রিমিয়াম কোয়ালিটির চিকন, লম্বা ও সুগন্ধি এ ধানের চাল বাসমতি চালের বিকল্প হিসাবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাবে। এছাড়া নন হাইব্রিড এ জাত দুটির ফলন হাইব্রিড ধানের কাছাকাছি। হেক্টরে ৮ টন ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এর দাম বাজারে বিক্রিত অন্য জাতের ধানের চেয়ে প্রতি মণে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি হবে। ফলে কৃষক চাষ করলে লাভবান হতে পারেন।