নিখোঁজের ৩০ বছর পর ফিরল সুফিয়া

প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

নিখোঁজের ৩০ বছর পর খোঁজ মিলল হারিয়ে যাওয়া সুফিয়া বিবির। বর্তমানে তিনি পাকিস্তানের ওমর উদ্দিন নামে একটি এলাকায় বসবাস করছেন। তার বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের নাওপাড়া কাশীগঞ্জ গ্রামে। হারিয়ে যাওয়ার সময় তার বয়স ছিল আনুমানিক ২০-২১ বছর।

এতদিন পরিবারের লোকজন জানতেন সুফিয়া মারা গেছেন। গত সোমবার ‘দেশে ফেরা’ নামে ফেসবুক আইডি থেকে হারিয়ে যাওয়া সুফিয়ার একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়। পরে এটি ভাইরাল হলে সুফিয়ার স্বজনরা তাকে শনাক্ত করেন।

এলাকাবাসী ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, বদরগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে চলা যমুনেশ্বরী নদী পাড়ের ছোট্ট গ্রাম কাশীগঞ্জ। ওই গ্রামের চাঁন মামুদ ও শরিতন নেছা দম্পতির মেয়ে সুফিয়া বিবি। ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সে পারিবারিকভাবে পাশের দামোদরপুর ইউনিয়নের সৌলারপাড় গ্রামের জব্বার মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ঘরে দুই সন্তানও ছিল। কিন্তু কি কারণে কোন অভিমানে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন সুফিয়া। পরে স্বামী ও এক কন্যাসন্তানের মৃত্যু হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও সুফিয়ার কোনো সন্ধান পায়নি স্বজনরা। এক পর্যায়ে হাল ছেড়ে দেন তারা। অনেকেই মনে করেন সুফিয়া হয়তো মারা গেছেন।

এরমধ্যে ‘দেশে ফেরা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ফেসবুক আইডি থেকে গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) একটি ভিডিও প্রকাশ হয়। সেখানে এক মহিলা তার আকুতি প্রকাশ করেন। তার বাড়ি বাংলাদেশে বলে বক্তব্য দেন। এতে তিনি বলেন, তার নাম সুফিয়া বিবি। বাবার নাম চান মিয়া। ভাই সহিদার রহমান, মতিয়ার রহমান, বোন রোসনা বেগম ও নুর জাহান। বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায়। গ্রামের নাম তিনি বলেন, নাওপাড়া কাশীগঞ্জ।

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে সুফিয়ার স্বজনদের দৃষ্টি কাড়ে। পরে যোগাযোগ করা হয় ‘দেশে ফেরা’ গ্রুপের সদস্যদের কাছে। তারাও সুফিয়ার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হন। গত বুধবার বিকাল ৪টায় পাকিস্তান থেকে বদরগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে সুফিয়ার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলার ব্যবস্থা করা হয়। সেখান থেকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন সুফিয়া। আর সহযোগিতা করেন ‘দেশে ফেরার’ টিম সদস্যরা। এদিকে জানতে চাইলে ‘দেশে ফেরা’ গ্রুপের সদস্য তানভির হাসান বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সদস্য নিয়ে আমাদের একটি সামাজিক সংগঠন আছে। মূলত যারা বিভিন্নভাবে একদেশ থেকে অন্য দেশে গিয়ে নিখোঁজ বা পাচার হয়েছেন তাদের নিজ নিজ দেশের স্বজনদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকি।