এপ্রিলেই ১২ জনের মৃত্যু

পদ্মায় তলিয়ে গেল আরো দুই শিশু

প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাজশাহী ব্যুরো

রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে আবারও দুই শিশু নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। এরই মধ্যে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যজনকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরিরা পদ্মা নদীর তলদেশ সন্ধান চালাচ্ছেন। তবে অন্যজন এখনও নিখোঁজ।

গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পৌরসভার রেলবাজার খেয়াঘাট এলাকায় দুই শিশু ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিকাল ৩টার দিকে যেই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তার নাম উসমান আলী (১৩)। সে গোদাগাড়ী উপজেলার মহিশালবাড়ি সাগরপাড়া গ্রামের ওমর আলীর ছেলে। এছাড়া নিখোঁজ শিশুর নাম সুলতান মুহাম্মদ সাইফ (১৫)। সে একই গ্রামের প্রবাসী নাসির উদ্দিনের ছেলে। এ দুই শিশুই মহিশালবাড়ি আল-ইসলাহ ইসলামী একাডেমির ছাত্র। স্থানীয়রা জানান, গতকাল রোববার সকালে আল-ইসলাহ ইসলামী একাডেমীর পাঁচ শিক্ষার্থী উপজেলার পদ্মা নদীর ওই খেয়াঘাটে গোসল করতে নামে। এ সময় দুজন ডুবে যায়। পরে অন্য তিনজনের কান্নাকাটির আওয়াজ পেয়ে স্থানীয়রা এগিয়ে যান। তারা নদী থেকে উসমান আলীর মরদেহ উদ্ধার করেন। তবে সাইফকে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দপ্তরের ডুবুরি দলকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তিনজন ডুবুরি ঘটনাস্থলে পৌঁছে গতকাল রোববার দুপুর ১টা থেকে পদ্মা নদীর তলদেশে নিখোঁজ শিশুর সন্ধানে চিরুনি অভিযান চালাচ্ছেন।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন বলেন, গোসল করেতে নেমে ওই দুই শিশু নিখোঁজ হয়েছিল। এর মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আর শিশু ডুবে যাওয়ার ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে উসমান আলীর মরদেহটি দাফনের জন্য অনুমতি দেওয়া হবে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদরদপ্তরের ডুবুরি ইউনিটের লিডার আবদুর রাজ্জাক জানান, নিখোঁজ শিশুকে খুঁজে পেতে গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালানো হবে। এরপরও না পাওয়া গেলে পরদিন ভোরে ফের অভিযান শুরু হবে। এদিকে চলতি এপ্রিলেই রাজশাহীতে পানিতে ডুবে শিশুসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত শনিবার রাজশাহীর মোহনপুরে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। এর আগে ২৩ এপ্রিল রাজশাহীর শ্যামপুর বালুঘাট এলাকায় পদ্মায় ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু হয়। আর ওই তিনজনই মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ছিল। এরও আগে ২১ এপ্রিল পবার হরিপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে এক কিশোর ও এক তরুণের মৃত্যু হয়। তার আগের দিন ২০ এপ্রিল বাঘায় পদ্মায় গোসল করতে নেমে এক কিশোর ডুবে মারা যায়। ১৯ এপ্রিল এই একই উপজেলায় এক শিশু পদ্মায় গোসল করতে নেমে ডুবে মারা যায়। ১৪ এপ্রিল বাঘায় আরো দুই শিশু পদ্মা নদীতে ডুবে মারা যায়। সর্বশেষ গতকাল রোববার দুজন শিশু তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অপরজন এখনো নিখোঁজ। আর মোহনপুরের দুজন শিশু ছাড়া অন্যরা তীব্র গরমে স্বস্তি পেতেই পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমেছিল।