নারী মাদক নির্ভরশীলদের চিকিৎসায় আহ্ছানিয়া মিশন

সাফল্যের ১০ বছর

প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। যা দেশের একমাত্র নারীদের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাকেন্দ্র। শুরু থেকে এ চিকিৎসাকেন্দ্র নারীদের মাদকনির্ভরশীলতা, মানসিক ও আচরণগত সমস্যার চিকিৎসা প্রদান করে আসছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটি মাদকনির্ভরশীলতা ও মানসিক সমস্যাগ্রস্ত নারীদের জন্য ১০ বছর ধরে সাফল্যের সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা প্রদান করছে। আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের সাফল্যের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় রাজধানীর শ্যামলীস্থ ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনের সভাপতির বক্তব্যে ইকবাল মাসুদ বলেন, নারী মাদকনির্ভরশীলদের চিকিৎসা প্রক্রিয়াটি পুরুষের তুলনায় বেশ জটিল ও সময় সাপেক্ষ। ক্রমবর্ধমান নারী মাদকনির্ভরশীলদের চিকিৎসা ও প্রতিরোধের দিকে বিশেষ নজর দেয়া উচিত। এক্ষেত্রে অবিভাবক ও নীতিনির্ধারকদের বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এটি দেশের একমাত্র সম্পূর্ণ নারী কর্মী দ্বারা পরচিালিত চিকিৎসাকেন্দ্র যা রোগীদের নিরাপত্তাসহ চিকিৎসা নিশ্চিতে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ কেন্দ্রে রোগীদের জীবন দক্ষতা বৃদ্ধি ও পুনর্বাসনের জন্য ভোকেশনাল কোর্স ও উদ্যেক্তা কোর্স প্রদান করে থাকে। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদের সভাপতিত্বে ওই সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসাকেন্দ্রটির মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস মজুমদার। এ সময় প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত মোট ৭৬২ জন নারী চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেছে। চিকিৎসাসেবা গ্রহণকারী নারীদের মধ্যে একই সঙ্গে একাধিক মাদক গ্রহণকারীসহ ৩৯ শতাংশ ইয়াবা গ্রহণকারী, ৩৯ শতাংশ গাঁজা এছাড়া ঘুমের ওষুধ, মদ, শিরায় মাদক গ্রহণকারী ও অন্যান্য মাদক গ্রহণকারী রয়েছে।

আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের গত বছরের (৩৩ শতাংশ ইয়াবা গ্রহণকারী, ২৮ শতাংশ গাঁজা, ১৬ শতাংশ ঘুমের ওষুধ) তথ্যের তুলনায় যেটা বৃদ্ধি পেয়েছে। মানসিক রোগের মধ্যে সিজোফ্রিনিয়া ৩৫ শতাংশ, মুড ডিজ্অর্ডার ২৬ শতাংশ, বাইপোলার ১২ শতাংশ, ডিপ্রেশন ১০ শতাংশ, ওসিডি ৬ শতাংশ বাকিরা অন্যান্য মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিল।৭৬২ জন নারীর মধ্যে মাদকনির্ভরশীলতা জনিত সমস্যার জন্য ৪৬৩ জনের ও মানসিক সমস্যার জন্য ২৯৯ জনের চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত যাচাই করে দেখা গেছে, ৭৬২ জন রোগীর মধ্যে ৭০ শতাংশ চিকিৎসার মেয়াদ পূর্ণ করেছে। মেয়াদ পূর্ণ না করে চলে গেছে ২২ শতাংশ এবং বিভিন্ন কারণে ৪ শতাংশ রোগীকে রেফার করা হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসা কেন্দ্রটিতে ৪ শতাংশ রোগী চিকিৎসারত আছেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র সাইক্লোজিস্ট রাখী গাঙ্গুলীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্র ব্যবস্থাপক ফারজানা ফেরদৌস।