বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৭০ শতাংশই হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগে হয়ে থাকে। তামাকপণ্যের ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, বায়ু দূষণ ইত্যাদিকে এর প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় হেলথ প্রমোশন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে এসব স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ এবং অসংক্রামক রোগজনিত মৃত্যু কমানো সম্ভব বলে মনে করেন তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিএমএ ভবনে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘টেকসই স্বাস্থ্য উন্নয়নে হেলথ প্রমোশন: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব তথ্য ও সুপারিশ উঠে আসে। কর্মশালায় জানানো হয়, স্বাস্থ্য কেবল নিরোগ থাকা নয় বরং শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে ভালো থাকার নামই স্বাস্থ্য। সাধারণভাবে স্বাস্থ্য উন্নয়ন, রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষা, চিকিৎসা, পুনর্বাসন, এবং উপশম এই পাঁচটিকে একত্রে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বলা হয়। তবে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী স্বাস্থ্য বলতে কেবল চিকিৎসা ব্যবস্থাকে বোঝানো হয়ে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে বাংলাদেশে চিকিৎসায় ব্যক্তির ব্যয় প্রায় ৭৪ শতাংশ। যার দুই-তৃতীয়াংশই খরচ হয় ওষুধে। হেলথ প্রমোশনের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হলে ব্যয় হ্রাসের পাশাপাশি জনগণের অসুস্থতা, মৃত্যু এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর চাপ কমে আসবে। সংস্থাটির মতে, হেলথ প্রমোশন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা মানুষ নিজের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যের নির্ধারকসমূহের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে এবং নিজ স্বাস্থ্যের উন্নতি লাভের সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম, খাবারে অতিরিক্ত চর্বি, লবণ ও চিনি পরিহার এবং তামাক ও অ্যালকোহল বর্জন প্রভৃতি কাজে উদ্বুদ্ধ করার পরিবেশ সৃষ্টি করা ‘হেলথ প্রমোশন’ কার্যক্রমের অংশ।
