ঢাকা ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি

জুনের মধ্যে কোটা বাতিল না হলে আন্দোলন

জুনের মধ্যে কোটা বাতিল না হলে আন্দোলন

জুন মাসের মধ্যে সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল শিক্ষার্থী। উল্লিখিত সময়ের মধ্যে কোটা বাতিল না হলে সর্বাত্মক আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে গতকাল রোববার তৃতীয় দিনের মতো ঢাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা এ ঘোষণা দেন। বেলা ১১টায় শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে একত্রিত হয়ে মিছিল নিয়ে কলা ভবন, প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্যের কার্যালয়ের প্রবেশপথ ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন। সেখানে তারা ‘বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি’ পালন করেন। তাদের হাতে ছিল ‘দেশ নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’, ‘মেধাবীরা মুক্তি পাক, কোটা নিপাত যাক’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড। সমাবেশ শেষে তারা অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিনের কাছে স্মারকলিপি দেন। আব্দুল হান্নান মাসুদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, দীর্ঘদিন কোটা বৈষম্য বহাল ছিল। শিক্ষার্থীরা ২০১৮ সালে আন্দোলনের মাধ্যমে তা থেকে ছাত্রসমাজকে মুক্ত করেছিল। আদালতের বৈষম্যমূলক রায় শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না। সমাবেশে শিক্ষার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি কোটার পক্ষে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দেখলাম। তিনি শিক্ষার্থীদের মন্ত্রী নন। যারা কোটার পক্ষে তাদের উদ্দেশে বলছি, নিজেদের অক্ষমতা ঢাকার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ব্যবহার করবেন না।’ আরেক ছাত্রী তামান্না আক্তার বলেন, ‘মেধাবীদের পিষ্ট করা হচ্ছে। আমি নারী হয়ে বলছি, আমার কোনো কোটার প্রয়োজন নেই।’ সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল থাকবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের দ্বৈত বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, পুরো কোটা বাতিল না করে কেবল নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের কোটা বাতিল করেছিল। এটা আজকে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এখন থেকে এসব গ্রেডে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তাদের সন্তানদের নিয়োগে আর কোনো বাধা নেই। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান জামান। তিনি জানান, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে সরকার। এ পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বুধবার রায়ে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এদিকে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। গতকাল রোববার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ সাইফুল আলম।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত