ঢাকা ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নতুন সেনাপ্রধান

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে জেনারেল পদবিতে পদোন্নতি প্রদানপূর্বক আগামী ২৩ জুন ২০২৪ অপরাহ্ন হতে ৩ (তিন) বৎসরের জন্য সেনাপ্রধান পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। তিনি বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হবেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ২০ ডিসেম্বর ১৯৮৫ সালে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য হিসেবে ১৩তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। সামরিক জীবনের শুরু থেকেই বিভিন্ন কোর্সে ভালো ফলাফলের ক্রমধারায় তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজ, মিরপুর থেকে সাফল্যের সাথে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি জয়েন্ট সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ, যুক্তরাজ্য থেকেও গ্রাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স অব ডিফেন্স স্টাডিজ (এমডিএস) সম্পন্ন করেন এবং যুক্তরাজ্যস্থ কিংস কলেজ, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে মাস্টার্স অব আর্টস ইন ডিফেন্স স্টাডিজ ডিগ্রি অর্জন করেন। তার সুদীর্ঘ ৩৯ বছরের বর্ণাঢ্য সামরিক জীবন কমান্ড, স্টাফ ও প্রশিক্ষকের অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ। তিনি ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ থেকে ০৮ জুন ২০১০ পর্যন্ত ১৭ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-অধিনায়ক ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহ দমনে নিষ্ঠা ও বিচক্ষণতার সাথে দায়িত্ব পালন করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ২৭ জুলাই ২০১১ থেকে ১১ নভে¤¦র ২০১৩ পর্যন্ত ২ বছরেরও বেশি সময় ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জিওসি হিসেবে ০২ এপ্রিল ২০১৪ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ পর্যন্ত তিন (৩) বছর নবম পদাতিক ডিভিশন কমান্ড করেন। এরিয়া কমান্ডার, সাভার এরিয়া ও জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) নবম পদাতিক ডিভিশন হিসেবে তিনি টানা তিন বছর অত্যন্ত সফলভাবে বিজয় দিবস প্যারেড-২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ এর প্যারেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। এই বিরল কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘সেনা গৌরব পদক’ (এসজিপি) এ ভূষিত হন। স্টাফ হিসেবে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত একটি ব্রিগেড, স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকস (এসআইঅ্যান্ডটি) এবং সেনাসদরে বিভিন্ন পদবি ও নিয়োগে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি প্রশিক্ষক হিসেবে জেসিও এনসিও একাডেমি (জেএনএ), স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকস ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিপসট) এ অত্যন্ত সুনামের সাথে সকল পদবির দেশি-বিদেশি সেনা সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। সেনাসদর সামরিক সচিবের শাখায় তিনি সহকারী সামরিক সচিব, উপ-সামরিক সচিব এবং সামরিক সচিব (এমএস) হিসেবে বিভিন্ন মেয়াদে দীর্ঘদিন কর্তব্যরত ছিলেন। সেনাসদর, জিএস শাখার চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পূর্বে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও-এএফডি) হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে কর্মরত ছিলেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি জাতিসংঘের ব্যানারে মিলিটারি অবজার্ভার হিসেবে এংগোলাতে এবং সিনিয়র অপারেশন অফিসার হিসেবে লাইবেরিয়াতে দায়িত্ব পালন করেন। সেনাবাহিনীতে তার কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি ‘অসামান্য সেবা পদক’ (ওএসপি) এ ভূষিত হন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবে দেশে ও বিদেশে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছেন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এবং সারাহনাজ কমলিকা জামান দুইকন্যা সন্তানের (সামিহা রাইসা জামান এবং শাইরা ইবনাত জামান) গর্বিত জনক-জননী। তিনি একজন সজ্জন, ক্রীড়ামোদি ও প্রাণবন্ত অফিসার হিসেবে সর্বমহলে সুপরিচিত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত