ঢাকা ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঈদকে কেন্দ্র করে রমরমা মৌসুমি ব্যবসা

ঈদকে কেন্দ্র করে রমরমা মৌসুমি ব্যবসা

পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি মাত্র দুই দিন। এরইমধ্যে কোরবানির জন্য অনেকেই পশু কেনার কাজটি শেষ করলেও কেউ কেউ এখনো বাজার যাচাই করছেন। তবে পশুর বিষয়টি শেষ হলেও সব আয়োজন শেষ করতে প্রয়োজন হয় নানা অনুসঙ্গের। এই যেমন ঈদের দিন পর্যন্ত পশুর খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা রাখা। আবার জবাইয়ের জন্য ধারালো ছুরি। মাংস কাটার চাপাতি। হাড় কাটার সুবিধার্থে প্রয়োজন হয় গাছের গুঁড়ি। এসব জিনিস রাখার জন্য আবার দরকার পড়ে চাটাইয়ের। শহরের তুলনায় গ্রামে এসবের অনেক কিছু হাতের নাগালে থাকলেও রাজধানীতে কোরবানি দিতে হলে সবকিছুই কিনতে হয়। তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।

কেননা ঈদকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে রাজধানীর প্রতিটি মহল্লায় জমে উঠেছে কাঠের গুঁড়ি ও চাটাইয়ের ব্যবসা। তবে এসবের দাম মোটামুটি সবসময় একটু চড়াই থাকে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন হাট ও আশপাশের এলাকায় দেখা গেছে গুঁড়ি, শুকনো ও কাঁচা ঘাস, চাটাই, ভুসি, গরু-ছাগল সাজাতে ঝুনঝুনি, জরির ফিতা, মালাসহ নানা সামগ্রী নিয়ে বসে আছেন অনেকে। বেচাবিক্রিও চলছে বেশ। তবে অনেকে আবার চাঁদ রাতে এসব কেনাকাটা করবেন বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

গত ৩-৪ দিন ধরে গরুর হাট বসার পরপরই মৌসুমি বিক্রেতারা গ্রামাঞ্চল থেকে গো-খাদ্য ও কোরবানির এসব অনুসঙ্গ নিয়ে এসেছেন রাজধানী ঢাকায়। তারা বলছেন, এসময়ে এসব জিনিসের দরকার। অন্য কাজে ফায়দা হবে না। তাই কিছু টাকা পুঁজি দিয়ে কয়েকদিনের জন্য ব্যবসা করার চেষ্টা করছেন এসব মৌসুমি ব্যবসায়ী। দয়াগঞ্জ বাজার মোড়ে কথা হয় ব্যবসায়ী সালিম মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, সারা বছর ভ্যান চালাই। এখন কাজ নেই তাই এই ব্যবসা করছি। গরুর খাবারের দাম বাড়ছে। কুড়া, লবণ, চালের খুদ, ডালের ভুসি, ভুট্টার ভুসি, গমের ভুসি কেজি দরে বিক্রি করতেছি। দাম গত বছরের তুলনায় বেশি হলেও বেচাকেনা ভালোই হইতেছে। তিনি বলেন, শুকনো খড় এক আঁটি ৫০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁচা ঘাস ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কমলাপুর হাটের গোলাপবাগ এলাকায় কয়েকজনকে দেখা গেছে চাটাই ও গাছের গুঁড়ি নিয়ে বসে আছেন। ছোট আকারের গাছের গুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়। মাঝারি আকারের গুঁড়ি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ও বড় আকারের গুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এ ছাড়া চাটাই আকার ও মানভেদে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ২০০ টাকায়। মানিকগঞ্জ থেকে আসা সিরাজুল ইসলাম বলেন, মাংস কাটতে গাছের গুঁড়ি লাগে। তেঁতুল গাছের না হলে লোকজন নিতে চায় না। ৩০ হাজার টাকার মতো ব্যবসায় খাটালাম। দেখি কেমন বিক্রি হয়। অন্যদিকে গরু সাজানোর জন্য কাগজের মালা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ টাকায়। জরির মালা ৩০ থেকে ২০০ টাকা, কাপড়ের মালা ১০০ থেকে ২০০ টাকা, ঝুনঝুনির মালা ১০০ থেকে ২০০ টাকা।

এদিকে কামারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর ঈদ ঘিরে পশু কোরবানির ছুরি আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ১৫০০ টাকায়, যা গত বছর ছিল ৩০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে। পশুর চামড়া ছাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত ছুরি একেকটি আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায়। গত বছর এগুলোর দাম ছিল ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। অন্যান্য চাকু আকারভেদে ২০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা ছিল। ক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় কোরবানিতে ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলোর দাম কিছুটা বেড়েছে। অন্যদিকে ভালো মানের বঁটি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকায়, যেগুলো গত বছর ৫০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ওজন অনুযায়ী প্রতি পিস চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকায়, যা গত বছর ছিল ৭০০ থেকে ১৩০০ টাকা। এছাড়া চাইনিজ চাপাতি প্রতি পিস ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মীরহাজিরবাগের দা-বঁটি ও ছুরি-চাকু বিক্রেতা মো. সালাউদ্দিন বলেন, এবার সব দা-বঁটি ও চাপাতিসহ সব ধরনের পশু জবাইয়ের সরঞ্জামের দাম ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। লোহার দাম বেড়েছে, তাই যন্ত্রপাতির দামও বেড়েছে। তবে বেচাকেনা এখনো সেভাবে বাড়েনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত