একটি রাস্তায় পাল্টে যাচ্ছে ১০ গ্রামের জীবনমান

* রাস্তাটি তৈরিতে ৪০ জন মানুষ জমি দান করেছেন। * ১০ গ্রামের মানুষের ভোগান্তির অবসান হতে যাচ্ছে

প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নজরুল ইসলাম দুলাল, কুমিল্লা

কুমিল্লার বরুড়ায় স্বেচ্ছাশ্রমে দেড় কিলোমিটার একটি সড়ক তৈরি করার পর পাল্টে গেছে ১০ গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা। সড়ক নির্মাণ নিয়ে উচ্ছ্বাসের শেষ নেই ১০ গ্রামের মানুষের। রাস্তাটি তৈরিতে ৪০ জন মানুষ জমি দান করেছেন। রাস্তা নির্মাণের খবর পেয়ে সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এজেডএম শফিউদ্দিন শামীম, দিয়েছেন নগদ অর্থ। এছাড়াও সরকারি অর্থে রাস্তাটি পাকা করতে সমীক্ষা চালিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার খোশবাস দক্ষিণ ইউনিয়নের জয়নগর এবং আশপাশের ১০ গ্রামের মানুষকে বরুড়া উপজেলা সদরে যেতে অনেকটা পথ ঘুরে যেতে হয়। অপর গ্রামগুলো হচ্ছে দেওড়া, জয়নগর, কালামুড়ি, ছালিয়া, ভদ্রারপাড়, হোসেনপুর, আরিফপুর, মুশকিপুর ও জাঙ্গালিয়া প্রভৃতি। এছাড়া ফসলের মাঠে চাষের জন্য ট্রাক্টর ও ফসল বাড়িতে আনতে গাড়ি নেয়ার ব্যবস্থা নেই। সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রখর রোদ উপেক্ষা করে এলাকার লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কেটে সড়ক তৈরি করছেন। কেউ কোদাল দিয়ে মাটি কাটছেন। কেউ মাটির ঝুড়ি মাথায় নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলছেন। এরই মধ্যে দেড় কিলোমিটার সড়ক তৈরি হয়ে গেছে। জয়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহেব আলী বলেন, দেওড়া থেকে জয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী আসে। এতে অনেক পথ ঘুরে আসতে হতো।

এতে ভোগান্তির কথা ভেবে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী হতেন না। সড়কটির কাজ শেষ হলে তারা কম সময়ে স্কুলে যেতে পারবে এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে। জয়নগর গ্রামের জয়নাল আবেদীন বলেন, আমাদের পুরাতন বাড়ি ছিলো দেওড়া। দেওড়ায় পানি কাদা মাড়িয়ে যেতে হয়। বর্ষাকালে দুর্ভোগ পোহাতে হতো। সড়কটি হয়ে গেছে দেখতে ভালো লেগেছে। সড়কটি তৈরিতে এগিয়ে আসেন দেওড়া গ্রামের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন। তার সাথে আরো ছিলেন একই এলাকার দিদারুল আলম, আবু তাহের ও জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্যানরা। এ বিষয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, এ সড়কটির অভাবে শত বছর ধরে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ পোহাতে হতো। এ সড়কটি নির্মাণের ফলে ১০ গ্রামের মানুষের ভোগান্তির অবসান হতে যাচ্ছে। আশা করি সরকারিভাবে জনস্বার্থের এ রাস্তাটি পাকা করা হবে। এতে আর দুর্ভোগে পড়তে হবে না।

বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নু এমং মারমা মং বলেন, ঈদের আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য এ জেড এম শফিউদ্দিন শামীম মহোদয়কে নিয়ে রাস্তাটি পরিদর্শন করেছি। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি (এমপি) উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে রাস্তার জন্য কিছু নগদ অর্থ সহায়তা করেছেন। সরকারি বরাদ্দে সড়কটি পাকা করা যায় কি না এ বিষয়ে সমীক্ষা করতে এমপি মহোদয় আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগ কাজ করছে। বরুড়া আসনের সংসদ সদস্য এ জেড এম শফিউদ্দিন শামীম বলেন, স্থানীয়দের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।

রাস্তাটি পরিদর্শন করেছি। তবে রাস্তার কারণে যেন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয় তাও দেখতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সমীক্ষা প্রতিবেদন পাওয়া গেলে রাস্তাটি সরকারি অর্থায়নে পাকাকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।