ধূমপানমুক্ত হোটেল-রেস্তোরাঁ চান মালিকরা

প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

হোটেল-রেস্তোরাঁয় শিশু-নারী ও বৃদ্ধদের জন্য সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি পাসের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন ময়মনসিংহ বিভাগ হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকরা। হোটেল ও রেস্তোরাঁয় স্মোকিং জোন রাখার বিধান বাতিল করতে হলে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস করতে হবে বলে জানান তারা।

গতকাল মঙ্গলবার ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ সেমিনার কক্ষে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন আয়োজিত সেমিনারে তারা এসব কথা বলেন। রেস্তোরাঁয় ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান করে দেওয়া হলেও সেখান থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ায় পরোক্ষ ধূমপানের কবলে পড়ছেন অধূমপায়ীরা। ফলে অধূমপায়ীদের হৃদরোগের ঝুঁকি ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে বলেও জানান বক্তারা। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ময়মনসিংহ বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) তাহমিনা আক্তার জানান, রেস্তোরাঁতে স্মোকিং জোনের সুযোগ নিয়ে তরুণরা ধূমপানমুখী হচ্ছে। তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আইন করে স্মোকিং জোন বাতিল করা জরুরি। পাশাপাশি রেস্তোরাঁয় স্মোকিং জোন বন্ধ করতে হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকদের পরামর্শ দেন তিনি। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আশ্বাসও দেন এই কর্মকর্তা। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার ফারুখ হোসেন জানান, তামাকের ব্যবহার নির্মূল করতে হলে ঘর থেকে এর প্রতিরোধ গড়তে হবে। কিশোর-তরুণদের সিগারেট সেবনে নিরুৎসাহিত করতে তামাকের বিরুদ্ধে প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে। স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ বলেন, পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া অধূমপায়ীদের নাগরিক অধিকার।

পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বহাল রেখে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে অধূমপায়ীদের রক্ষা করা কখনোই সম্ভব নয়। এমতাবস্থায়, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় রেস্তোরাঁয় ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে)-এর প্রোগ্রামস ম্যানেজার আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, ‘রেস্তোরাঁয় ডেকোরেশন করে কৌশলে তাদের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে, তামাক কোম্পানিগুলো। ফলে তরুণরা সিগারেটের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে বাঁচতে রেস্তোরাঁতে স্মোকিং জোন বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি, হোটেল-রেস্তোরাঁয় সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া দ্রুত পাস করতে হবে।

এ সময় মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে রেস্তোরাঁয় স্মোকিং জোন বাতিলের পক্ষে মত দেন ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর ও জামালপুর জেলার (সেমিনারে উপস্থিত হোটেল-রেস্তোরাঁর প্রতিনিধিদের সংখ্যা) হোটেল-রেস্তোরাঁর প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি সংশোধিত খসড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি দ্রুত পাস করে রেস্তোরাঁসহ সব পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী শরিফুল ইসলাম। প্রবন্ধে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হয়- ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ।