একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণে হোক ডিজিটাল কনটেন্ট

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  গাজীপুর প্রতিনিধি

সমাজবিরোধী কাজের জন্য নয়, একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণে ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহার করা আবশ্যক বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, সমাজের মঙ্গল করার জন্য, সৃজনশীল কাজের জন্য, বিজ্ঞানমুখী, গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের জন্য, সর্বোপরি গবেষণা ও নতুন নতুন প্রশ্ন অনুসন্ধানের জন্য ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করা জরুরি। মানুষকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য বা ধ্বংসাত্মক কাজের জন্য এসব ব্যবহার করা উচিত নয়। গত শনিবার মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজের (ইএসসিবি) মূল ক্যাম্পাসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন কলেজ অ্যাডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) আয়োজিত কলেজ শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণের ৭, ৮ ও ৯ম ব্যাচের অ্যাডভ্যান্সড আইসিটিবিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান। শিক্ষার্থীদের গবেষণার্ধর্মী পড়াশোনায় আগ্রহী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, আমাদের ভালো রিসার্স আর্টিকেল পড়তে হবে।

আমরা সোশ্যাল মিডিয়া ও ই-মেইলে অনেক কিছু শেয়ার করি। গুরুত্ব দেয়া উচিত ভালো রিসার্স ও কনটেন্টকে। শিক্ষার্থীদের ই-মেইল আইডি দিয়েছি। আমাদের যে নেটওয়ার্ক আছে, সেখান থেকে বা বিশ্বখ্যাত জার্নাল থেকে আমরা ভালো আর্টিকেল একে অপরকে শেয়ার করতে পারি। অনেক কনটেন্ট শেয়ার করা যায়- মিথ্যা কনটেন্ট, মানুষকে বিপর্যস্ত করার কনটেন্ট, মানুষকে অস্থির করার কনটেন্ট। এসব শেয়ার করা সহজ কারণ এটিতে মানুষকে উসকানি দেয়া যায়। কিন্তু আমাদের তো কাজ সেটা নয়। আমরা বিশ্বব্যবস্থার কথা বলি- তারা এতো উন্নত কেন? কারণ ওরা আর্টিকেল শেয়ার করে, বই শেয়ার করে, ওরা অযাচিত কনটেন্ট শেয়ার করে না। ওরা আগুন দেয় না। তরুণদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বসে থাকলে চলবে না। তোমরা অগ্রসর পৃথিবীতে নেতৃত্ব দেবে। ফলে কনটেন্ট শেয়ার করার ক্ষেত্রেও সচেতন হওয়া জরুরি। সস্তা জিনিস শেয়ার করে দেশকে দূরবস্থায় ফেলে কার লাভ করে দিচ্ছি? সবার ওপরে দেশ। দেশের ক্ষতি কারোই কাম্য হতে পারে না। সেকারণেই বলছি, যখন তুমি কোনো কনটেন্ট শেয়ার করবে- সেখানে একটি ন্যাশনাল সোসাইটি, জ্ঞানভিত্তিক সমাজের দর্শন থাকতে হবে। শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বলেন, বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণের বাইরে আমরা প্রতিটি কলেজের দুইজন শিক্ষককে আইসিটি এবং দুইজনকে প্যাডাগোজি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এর মধ্য দিয়ে একটি কলেজে চারজন শিক্ষক প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন।

আপনারা প্রশিক্ষণে অর্জিত অভিজ্ঞতা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ইন-হাউস প্রশিক্ষণ আয়োজন করুন। তাহলে সকল শিক্ষককে আমরা প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসতে পারবো। এজন্য পরিকল্পনা করুন, উদ্যোগ নিন। ইন-হাউস প্রশিক্ষণ আয়োজনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সব ধরনের সহযোগিতা নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। শুধু তাই নয়, আমরা লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এলএমএস) চালু করতে যাচ্ছি। এর আওতায় রিসোর্স হাব গঠন করা হচ্ছে। অচিরেই এটি চালু হবে। এই রিসোর্স হবে দেশের ভালো ভালো শিক্ষকদের ক্লাস লেকচার আপলোড করা হবে। এর মধ্য দিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের লেকচার পাবে।

শিক্ষকদের গবেষণায় এবং টেক্সট বই লেখায় মনোযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, সম্ভাবনাও আছে অনেক।

আমরা গবেষণা খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রেখেছি। বই লেখা প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করছি। কিন্তু শিক্ষকদের মধ্য থেকে তেমন সাড়া পাই না। আপনাদের এসব কাজে এগিয়ে আসতে হবে।