বিপাকে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা

প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

দোকানপাট খোলার পাঁচ দিন পার হলেও ক্রেতা সংকটে ব্যবসা জমেনি ফুটপাতের দোকানগুলোতে। বেচা-বিক্রি না থাকায় স্বল্প আয়ের ব্যবসায় পুঁজি হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় পকেট খরচ তুলতেও হিমশিম খাচ্ছেন তারা। কোটা সংস্কার নিয়ে টানা ক’দিনের আন্দোলন-অবরোধে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জারি করা হয় কারফিউ। তিন দিন ঘোষণা করা হয় সাধারণ ছুটি। পরে গত বুধবার (২৪ জুলাই) কারফিউ শিথিল করা হলে শুরু হয় অফিস-আদালতের কার্যক্রম। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সিদ্ধান্তে খুলতে শুরু করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতান। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরাও খুলতে শুরু করেন দোকান। কিন্তু ক্রেতা কম থাকায় বেশিরভাগ ব্যবসাতেই মন্দা পরিস্থিতি যাচ্ছে। বড় ব্যবসায়ীরা ধাক্কা সামলে নিতে পারলেও ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। বেচা-বিক্রি না থাকায় মূলধন হারানোর শঙ্কায় ভুগছেন তারা। ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা জানান, কারফিউ কিছু সময় শিথিল থাকলেও ক্রেতা আসছে না। এ সময়টাতে কর্মব্যস্ত মানুষ ছুটছেন অফিস-কর্মক্ষেত্রে। এছাড়া, মাসের শেষ হওয়ায় মানুষের হাতে বাড়তি পণ্য কেনার মতো টাকাও নেই। যে কারণে বিক্রি তলানিতে নেমেছে। টানা দোকান বন্ধ থাকা এবং এরপর বিক্রি কমে যাওয়ায় পুঁজি ভেঙে সংসারের খরচ মেটাচ্ছেন তারা।

ফার্মগেট এলাকার ফুটপাতের বিক্রেতা রিয়াজুল বলেন, আমাদের ক্রেতা মূলত স্বল্প আয়ের মানুষ। ক’দিন ধরে মানুষজন ঘরে বন্দি ছিলেন। কোনো ইনকাম নেই। নগদ টাকা যা ছিল, খেয়েপরে বেঁচে আছেন। এখন খাওয়ার টাকা জোগাড় করতে ব্যস্ত তারা। কাপড়-চোপড়ে মনোযোগ নেই। তবে স্কুল-কলেজ খোলা থাকলে তাও কিছুটা বিক্রি হতো।

সিয়াম নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, ফুটপাতে আসলে বেচা-বিক্রি হয় মানুষের অফিসে যাওয়া-আসার সময়। কারফিউয়ের কারণে মানুষ রাস্তায় দাঁড়াচ্ছেন কম। বাসায় ফেরার জন্য ব্যস্ত থাকছেন বেশি। তাছাড়া মাসের শেষে মানুষের হাতে টাকা-পয়সা কম। বেতন পেলে হয়তো আমাদেরও বিক্রি বাড়বে। কিন্তু ততোদিনে ব্যবসার পুঁজি থাকলেই হয়। ভাত তো আমাদেরও খাইতে হয়।

নিউ মার্কেট এলাকার ফুটপাতে গৃহস্থালি পণ্য বিক্রেতা রইস উদ্দিন বলেন, ‘১০ দিন পর দোকান খুলছি। গ্রামেও যাইতে পারি নাই। ঘরে আটকে থেকে হাত একদম খালি। কিন্তু ব্যবসার যে পরিস্থিতি, যা বিক্রি হচ্ছে, সেটা দিয়ে নিজের পকেট খরচই উঠছে না।’ হাতে নিয়ে মেয়েদের জুয়েলারি বিক্রি করতেন মাতুব্বর আলী। চলমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা পরিবর্তন করে চাঁদনী চকের সামনে শসা বিক্রি করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘জানি বিক্রি হইবো না। তাই ব্যবসা পাল্টাইছি। প্যাট তো আর বইস্যা থাকতে দেয় না। অবস্থা ভালা হইলে আবার পুরান ব্যবসায় ফেরত যামু।’