ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চট্টগ্রামে কাজে যোগ দিতে শুরু করেছে ট্রাফিক পুলিশ

চট্টগ্রামে কাজে যোগ দিতে শুরু করেছে ট্রাফিক পুলিশ

সম্প্রতি সারা দেশে নানা অরাজক পরিস্থিতির পর আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন। বিগত সরকার পতনের পর পুলিশ থেকে শুরু করে ট্রাফিক ব্যাবস্থাপনা ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। এতে গেল কয়েকদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে সর্বস্তরের মানুষদের।

রাস্তায় সব ট্রাফিক পুলিশের হঠাৎ অনুপস্থিতিতে রাস্তাঘাটে পরিবহন চলাচলে কিছুটা ব্যাত্যয় হয়েছে। যদিওবা শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় এ দায়িত্ব খুব সুন্দরভাবে পালন করেছেন।

আশার কথা হচ্ছে বন্দর নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে পাঁচটি পয়েন্টে দায়িত্ব পালনে নেমেছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। এসব স্থানে তাদের সঙ্গে একজন করে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিও রয়েছেন। গতকাল সোমবার সকাল থেকে পোশাক গায়ে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের। প্রাথমিকভাবে নগরের জিইসি মোড়, আগ্রাবাদ, টাইগারপাস, ওয়াসা এবং লালখানবাজার এলাকায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ।

প্রয়োজনে তারা নিউমার্কেট এলাকায়ও কাজ করবেন বলে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। গত ৬ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। পরে তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন রেড ক্রিসেন্ট-বিএনসিসি ও আনসার সদস্যরা। ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে অনন্য নজির সৃষ্টি করা শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার ও বোতলজাত পানি বিতরণ করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ।

তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনও। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জিইসি মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের কয়েকজন সদস্য দায়িত্ব পালনকালে পথচারীরা তাদের স্বাগত জানান। অনেকে আনন্দে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে হাত মেলান এবং কোলাকুলি করেন। জিইসি মোড় এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. ইউনুস ও মো. লুতফুল আলম জানান, বপশ কিছুদিনের কর্মবিরতির পর কাজে যোগ দিতে পেরে ভালো লাগছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা এক সপ্তাহ ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। তাদের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। তারা ভালোভাবেই ট্রাফিক ব্যবস্থা সামলেছে। তাদের নিয়ে গর্ববোধ করছি। ট্রাফিক পুলিশকে রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান মো. জামাল উদ্দীন।

তিনি বলেন, অনেকদিন পর রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ দেখে ভালো লাগছে। সবার কাছে অনুরোধ করছি-আপনারা পুলিশের পাশে থাকুন। পুলিশের প্রতি কেউ ক্ষিপ্ত হবেন না, তারাও এই দেশের মানুষ। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশকে দরকার। নগরের ওয়াসা মোড়ে দায়িত্ব পালনরত ট্রাফিক পুলিশের এক সার্জেন্ট বলেন, অনেকটা সময় পর আবার দায়িত্বে ফিরেছি। শিক্ষার্থীরা আমাদের সহায়তা করছেন।

তাদের সহোযোগিতা আমাদের নতুনভাবে কাজ করতে সাহস যোগাচ্ছে। এর আগে গত রোববার বিকালে দামপাড়া পুলিশ লাইনসের কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় সিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। দুয়েক দিনের মধ্যে ক্রমান্বয়ে নগরের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আগের মতো কাজ করবে।

আমি দেখেছি, শিক্ষার্থীরা কঠোর পরিশ্রম করে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। তাদের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তিনি আরো বলেন, নগরের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিটি পয়েন্টে তাদের সঙ্গে একজন করে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিও থাকবেন।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। পুলিশ সদস্যরা পোশাক পরিহিত অবস্থায় দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি সবার কাছে সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত