সাংবাদিকতার আড়ালে নানা অপকর্মে জড়িত জবি শিক্ষার্থী মিলন

প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জবি প্রতিনিধি

রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলে স্ত্রীকে চাকরি দেন সাবেক জবি শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল। তবে স্বামীর প্রভাব দেখিয়ে ক্লাস না নেয়ার অভিযোগও উঠেছে একাধিকবার। তবে তার ক্লাসের প্রক্সি দিতো রাসেলের পরিচয় দিয়ে দাপিয়ে বেড়ানো বাংলাদেশ প্রতিদিনের জবি প্রতিনিধি মাহির অমির মিলন। জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহির অমির মিলন। মিলনের নিজ জেলা কুমিল্লা। একই জেলায় শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের বাসা হওয়ায় সুসম্পর্ক রয়েছে দুজনের। রাসেলের প্রভাব খাটিয়ে ক্যম্পাসে এক শিক্ষককে শারীরিক হেনস্তারও অভিযোগ আছে এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, রাসেলের ছত্রছায়ায় থাকার কারণে জুনিয়র হওয়ার পরও জবিস্থ কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণের সাধারণ সম্পাদকের পদ ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ফলে জবিতে অধ্যয়নরত কুমিল্লা জেলার শিক্ষার্থীদের মধ্যেও রয়েছে ক্ষোভ।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের জবি প্রতিনিধি নিয়োগেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগ রয়েছে। তিন মাসেরও অধিক ইন্টার্নিং করা অপর এক জবি শিক্ষার্থীকে বাদ দিয়ে মিলনকে বাংলাদেশ প্রতিদিনের জবি প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হয়। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামের জেলা কুমিল্লা হওয়ার সুবাদে সাবেক জবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রাসেলের মাধ্যমে তদবির করে নিয়োগ ভাগিয়ে নেন মিলন।

শুধু তাই নয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দুর্নীতি ও টেন্ডার বাণিজ্যের অন্যতম হোতা সাবেক কোষাধ্যক্ষ কামাল উদ্দীন আহমেদের সাথেও ছিল সাংবাদিক মিলনের সুসম্পর্ক। কোষাধ্যক্ষ কামাল ও মিলনের জেলাও কুমিল্লা।

সেই খাতিরে ক্যাম্পাসে দাপিয়ে বেড়াতো মিলন। এছাড়া মিলনের সাথে রয়েছে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইনের দহরমণ্ডমহরম সম্পর্ক। সাংবাদিকতার আড়ালে ফরাজি-আকতারের নানা অপকর্মের সেফ গার্ড (সুরক্ষাদাতা) হিসেবে কাজ করতো বলে অভিযোগ মিলনের বিরুদ্ধে।

প্রক্সি ক্লাস নেয়ার বিষয় মুঠোফোনে সাংবাদিক মাহির অমির মিলনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মিলন বলেন, তুমি বিষয়টি আরো একটু সত্যতা যাচাই করো দেখো, কতটুকু সত্য। তোমাকে যে শিক্ষক প্রক্সি ক্লাসের বিষয়ে বলেছে, তার নামটি বলতে পারলে আমিও জানতে পারতাম, কখন ক্লাস নিছিলাম।

এ বিষয়ে পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার বলেন, ছাত্রলীগ নেতা রাসেলের বউ ফারজানা হক তুম্পা এখানে চাকরি করতো। তার নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে আমি বেশি কিছু জানি না। তবে ফারজানা নিয়মিত ক্লাস নিতে আসতো না। তার প্রক্সি হিসেবে জগন্নাথের এক শিক্ষার্থী কিছুদিন ক্লাস নিয়েছিল।

পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে আমি জানি না। অধ্যক্ষের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানাতে পারবো।