সেনাবাহিনী প্রধান এবং ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স, ঢাকা সেনানিবাসে এ মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময়সভায় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, সেনা সদর ও গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মীর নাসির হোসেন, এ কে আজাদ, মো, জসিম উদ্দিন, তপন চৌধুরী, আশরাফ আহমেদ, খন্দকার রফিকুল ইসলাম এবং নাসের এজাজ বিজয় উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতেই সেনাবাহিনী প্রধান তার বক্তব্যে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাবসায়িক সমাজের গুরুত্ব ও অবদানের কথা উল্লেখ করেন এবং দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তা বিধানে সেনাবাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরেন।
এ ছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান শিল্প-কারখানা চালু রাখার ব্যাপারে সেনাবাহিনী কর্তৃক নিরাপত্তা সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করেন। এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম তার বক্তব্যে সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে সেনাবাহিনীর সময়োচিত ভূমিকা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ব্যবসা বাণিজ্য ও শিল্প-কারখানায় উৎপাদন অক্ষুণ্ণ রাখাসহ আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করায় সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ ছাড়া তিনি ব্যবসা ও বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, শিল্প-কারখানার নিরাপত্তা প্রদান, বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন, অর্থনৈতিক গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ককে আরো ঘনিষ্ঠতর করা, আমদানি-রপ্তানিসহ নিরবচ্ছিন্ন পণ্য সরবরাহ ও সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিতকরণ, সব বন্দর ও ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সব মহাসড়কের নিরাপত্তা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করেন। সেই সঙ্গে তিনি শিল্প-কারখানা ও মহাসড়কে চাঁদাবাজি রোধ, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও ব্যাবসায়িক সংগঠনসমূহের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তাসংক্রান্ত ঝুঁকিসমূহ নিরসনের ব্যবস্থা, অগ্নিসংযোগের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া কল-কারখানাসমূহ পুনরায় চালুকরণ এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরেন। এ সময় সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতারা একটি উন্মুক্ত পরিবেশে তাদের মতামত ও পরামর্শ উপস্থাপন করেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী প্রধান ব্যবসায়ী নেতাদেরকে শিল্প-কলকারখানা ও শিল্পাঞ্চলসমূহে নিরাপত্তা প্রদান, চাঁদাবাজি বন্ধ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনসহ বিবিধ কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনী পাশে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন। উল্লেখ্য, দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে শিল্পাঞ্চলসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর শিল্পাঞ্চল নিরাপত্তা সেল গত ৯ আগস্ট গঠন করা হয়। শিল্পাঞ্চল নিরাপত্তা সেলের তত্ত্বাবধানে শিল্প পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সহায়তায় অতি দ্রুত সাময়িক বন্ধ থাকা কারখানাসমূহ পুনরায় চালু হয় এবং আস্থার ও নিরাপদ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শিল্পাঞ্চলসমূহের নিরাপত্তাকল্পে এবং দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।