আওয়ামী লীগ দলীয় কর্মকাণ্ডে সড়ক পরিবহনের মালিক-শ্রমিকদের ব্যবহার করেছে এবং সরকারবিরোধী আন্দোলনে সবসময় ব্যবহার করেছে বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নতুন আহ্বায়ক কমিটি। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনে সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক বিফ্রিংয়ে এমন মন্তব্য করেন কমিটির আহ্বায়ক মো. সাইফুল আলম। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন নির্যাতন, নিপীড়নের ফলশ্রুতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফার মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। একই সময়ে পরিবহন সেক্টরে দীর্ঘদিনের মালিকদের স্বার্থ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে যারা সরাসরি জড়িত ছিল তারা পরিবহন সেক্টর পরিত্যক্ত রেখে দেশের বাহিরে পালিয়ে যায়। বাকিরা আত্মগোপনে চলে যায়।
পালিয়ে যাওয়া নেতৃত্ব ঢাকা সড়কের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও নিয়ম বহির্ভূতভাবে নির্বাহী কমিটিকে পাশ কাটিয়ে একক কর্তৃত্ব স্থাপন করেছিলেন। তিনি বলেন, ২০০৮-২৪ সাল পর্যন্ত ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিসহ সারা বাংলাদেশে পরিবহন সেক্টরে এক নৈরাজ্যকর অবস্থা বিরাজমান ছিল। চাঁদাবাজি, দখল, নিয়ম বহির্ভূত ঢাকা সড়ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন টার্মিনাল, জেলা পর্যায়ে ও আঞ্চলিক মালিক সমিতি/বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানি দখল করে এককভাবে দলীয় নেতৃত্ব কায়েম করে তারা। বিগত দিনে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নামে চাঁদাবাজির স্বর্গ রাজ্য কায়েম করে তারা। ঢাকা সড়কের নেতৃত্বে পরিবেশবান্ধব চাঁদাবাজিমুক্ত জনকল্যাণমুখী সড়ক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার জন্য আমরা ৭টি প্রস্তাব গ্রহণ করেছি। আমাদের প্রস্তাবগুলো হচ্ছে— ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃত্বে যানবাহনে চাঁদাবাজি বন্ধ ও যাত্রীবান্ধব পরিবহন সেবা নিশ্চিত করা; সকল বাস টার্মিনাল/কোম্পানি, শহরতলী ও আঞ্চলিক কমিটিকে চাঁদামুক্ত রাখা; যাত্রীদের নিরাপত্তা ও নিরাপদ সড়ক গড়ার লক্ষ্যে কাজ করা; সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রাখা; মালিক-শ্রমিক প্রশাসন সর্বোপরি ছাত্র-জনতাকে সম্পৃক্ত করে যাত্রী জনকল্যাণমুখী নিরাপদ সড়ক গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সকল টার্মিনালে শ্রমিকদের কাউন্সেলিং/মোটিভেশন সভা করার ব্যবস্থা করা; চাঁদামুক্ত ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা এবং সুন্দর ও সুষ্ঠভাবে গাড়ি পরিচালনার জন্য টার্মিনাল ও অঞ্চলভিত্তিক প্রকৃত মালিকদের নিয়ে কমিটি গঠন করা। তিনি আরো বলেন, আমরা বিগত দিনের বিরাজমান অনিয়ম দূর করে জনবান্ধব পরিবহন ব্যবসা গড়ে তুলতে চাই। সর্বোপরি আধুনিক নিরাপদ জনকল্যাণমূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের সঙ্গে একীভূত হয়ে দেশ গড়ায় আমরা অংশীদার হতে চাই। সংবাদ সম্মেলনে নতুন কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।